আবার হার ইস্টবেঙ্গলের, ডার্বির পর এ বার চেন্নাইয়িনের কাছে পরাজিত লাল-হলুদ

ঘরের মাঠে তিনটি ম্যাচ খেলে ফেলল ইস্টবেঙ্গল। প্রতি ম্যাচেই সমর্থকরা আসেন মনে অনেক আশা নিয়ে। একটা জয় দেখার আশায়। কিন্তু স্টিভন কনস্ট্যান্টাইনের দল তিনটি ম্যাচ হয়ে গেলেও সমর্থকদের সেই উপহার দিতে পারল না। কলকাতা ডার্বির পর শুক্রবার চেন্নাইয়িন এফসির কাছে ০-১ ব্যবধানে হেরে গেল ইস্টবেঙ্গল। চলতি আইএসএলে পাঁচ ম্যাচ খেলে এটি ইস্টবেঙ্গলের চতুর্থ হার। সমর্থকদের আশা যে ক্রমশ কমতে শুরু করেছে, এটা ম্যাচের পর তাঁদের হতাশ চোখমুখই বলে দিচ্ছিল।

শুক্রবার ইস্টবেঙ্গল যে খেলাটা খেলল তা ডার্বির পারফরম্যান্সের ধারেকাছে নেই। ডার্বিতে তবু প্রথমার্ধে ইস্টবেঙ্গলের সৃষ্টিশীল, আক্রমণাত্মক ফুটবল অবাক করে দিয়েছিল সমর্থকদের। সেটাই বদলে গেল চেন্নাইয়িন ম্যাচে। এ দিকে আগের ম্যাচের খেলার ছিটেফোঁটাও প্রচেষ্টা দেখা গেল না ইস্টবেঙ্গলের কোনও ফুটবলারের মধ্যে। পরের পর ভুল পাস, নড়বড়ে রক্ষণ। চেন্নাইয়িন প্রায় সারা ক্ষণ চাপে রেখে গেল ইস্টবেঙ্গলকে।

খেলার শুরুতেই খারাপ ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন সার্থক গোলুই। তার পর থেকে আক্রমণ করতে থাকে চেন্নাইয়িন। এর মধ্যে ইস্টবেঙ্গল যে দু’টি সুযোগ পেয়েছিল, তা কাজে লাগাতে পারলে কোনও মতেই হেরে ফিরতে হয় না। ২১ মিনিটের মাথায় মাঠের মাঝখান থেকে ক্লেটন সিলভা বল পেয়ে পাস দেন ভিপি সুহেরকে। ডান দিকে এগিয়ে গিয়ে সুহের অনেকটা জায়গা পেয়েছিলেন বিপক্ষের গোলকিপার দেবজিৎ মজুমদারকে পরাস্ত করার। তাঁর গড়ানো শট পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়।

তার ১৫ মিনিটে পরে একই রকম সুযোগ নষ্ট করেন ক্লেটন নিজেই। বরং তিনি সুহেরের থেকেও ভাল সুযোগ পেয়েছিলেন বললে ভুল বলা হবে না। রক্ষণ সামলাতে গিয়ে ভুল করে বসেন চেন্নাইয়িনের ভাফা হাকামানেশি। তাঁর থেকে বল কেড়ে সামনে একা গোলকিপারকে পেয়েছিলেন ক্লেটন। তাঁর শটও পোস্টের বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যায়। ডাগআউট থাকা স্টিভনের তখন মাথায় হাত। আশেপাশে আর কোনও ডিফেন্ডার না থাকা সত্ত্বেও কেন ক্লেটন আর একটু এগিয়ে গিয়ে গোলে শট নিলেন না, তা বোঝা দুর্বোধ্য।

গোলের পর উচ্ছ্বাস করতে গিয়ে জার্সির ভেতরে লেখা কিছু বার্তা দেখান ভাফা। সেই অপরাধে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখিয়ে তাঁকে মাঠ থেকে বের করে দেন রেফারি। দশ জনে হয়ে যাওয়া চেন্নাইয়িনের বিরুদ্ধে সুবিধা নেওয়া তো দূর, ইস্টবেঙ্গল নিজেরাই দশ জন হয়ে যায়। পাঁচ মিনিট পরে লাল কার্ড দেখেন সার্থক। বাকি ম্যাচে আর ইস্টবেঙ্গলের মধ্যে গোল শোধের প্রচেষ্টা দেখা যায়নি।

বিরতির পর হিমাংশু জাংরাকে নামিয়ে আক্রমণে ঝাঁজ বাড়াতে চেয়েছিলেন স্টিভন। কিন্তু হিমাংশুর খেলা দেখে বোঝা গেল তিনি এখনও সিনিয়র দলে খেলার জন্য তৈরি নন। গোটা ম্যাচে একটাও আক্রমণাত্মক মুভ তৈরি করতে পারেননি। দ্বিতীয়ার্ধে তা-ও ইস্টবেঙ্গলের খেলায় একটু বাড়তি তাগিদ লক্ষ্য করা যাচ্ছিল। সব ঘেঁটে গেল গোল খেয়ে যাওয়ায়। কর্নার নিয়েছিলেন আকাশ সাঙ্গওয়ান। এক গাদা লাল-হলুদ ফুটবলারদের নজর এড়িয়ে গোল করেন সেই ভাফা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.