শারীরশিক্ষার চাকরিপ্রার্থী যাঁরা ব্যাচেলার অব ফিজ়িকাল এডুকেশন (বিপিএড)-এর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, তাঁরাও এ বার প্রাথমিক শিক্ষকের ১১ হাজার নতুন শূন্য পদে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। শুক্রবার রাতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ জানিয়েছে, ১১ ডিসেম্বর যে টেট হবে সেখানে বিপিএড প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা আবেদন করতে পারবেন।
এতদিন প্রাথমিক স্কুলগুলিতে পড়ুয়াদের খেলাধুলাকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হলেও প্রাথমিক স্কুলে কোনও শারীরশিক্ষার শিক্ষক ছিলেন না। নতুন করে ১১ হাজার শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে। মনে করা হচ্ছে, এ বার থেকে প্রাথমিকে শারীরশিক্ষার শিক্ষক নিয়োগও হবে।
শুক্রবার দুপুরে শারীরশিক্ষা চাকরিপ্রার্থী মঞ্চের এক দল প্রতিনিধি পর্ষদ সভাপতি গৌতম পালকে স্মারকলিপি দেন। সাফিয়া খাতুন নামে এক শারীরশিক্ষার চাকরিপ্রার্থীর মতে, ‘‘বিপিএড প্রশিক্ষণ কিন্তু ডিএলএড বা বিএড-এর প্রশিক্ষণের সমতুল। বিএড বা ডিএলএড প্রশিক্ষিতরা যদি টেট-এ বসতে পারেন বা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারেন তা হলে বিপিএড প্রশিক্ষিতরা কেন পারবেন না? এনসিটি বা ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার্স এডুকেশন কিন্তু বিপিএড প্রশিক্ষণের বৈধতা দিয়েছে।” সাফিয়া জানান, গৌতমকে তাঁরা এই স্মারকলিপি দেওয়ার পরে তিনি বিষয়টি বিবেচনার আশ্বাস দেন। শুক্রবার রাতেই এই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ।
প্রাথমিক শিক্ষকদের মতে, প্রাথমিক স্কুলগুলোতে শারীরশিক্ষার শিক্ষক নিয়োগ অনেক আগেই হওয়া উচিত ছিল। নতুন জাতীয় শিক্ষানীতিতে প্রাথমিক স্তরের খেলাধুলাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হান্ডা বলেন, “প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়াদের নিয়মিত ক্রীড়া প্রতিযোগিতা হয়। প্রথমে স্কুল স্তরে। সেখান থেকে গ্রাম পঞ্চায়েত তারপর সার্কেল, তারপর জেলা। সব শেষে রাজ্য স্তর পর্যন্ত এই ক্রীড়া প্রতিযোগিতাগুলি হয়। এই ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় শারীরশিক্ষার শিক্ষকেরা যদি পড়ুয়াদের গাইড করেন, তা হলে তারা প্রতিযোগিতায় আরও ভালো ফল করতে পারবে।” আনন্দর মতে, বেসরকারি স্কুলগুলি কিন্তু প্রাথমিক স্তর থেকেই খেলাধুলা, আবৃত্তি, নাচ, গান-সহ নানা ধরনের কার্যকলাপে ব্যস্ত রাখে পড়ুয়াদের। খেলাধুলা, নাচ, গান ইত্যাদির জন্য আলাদা করে শিক্ষক থাকেন।
অভিযোগ, এমন শিক্ষক না থাকায় অনেকেই সরকারি স্কুলে ভর্তি না হয়ে বেসরকারি স্কুলগুলোতে ভর্তি হয়। এ বার আলাদা করে শারীরশিক্ষার শিক্ষক থাকলে সরকারি প্রাথমিক স্কুলগুলোতে অনেকেই সন্তানদের ভর্তি করতে উৎসাহিত হবেন।
প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের উপসচিব পার্থ কর্মকার বলেন, “এ বার শারীরশিক্ষার প্রার্থীরা যাঁরা বিপিএড প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত তাঁরা নতুন নিয়োগ পদ্ধতিতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন এবং টেটেও বসতে পারবেন।”