এ বার সরাসরি প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের অভিযোগের বিরোধিতা করল আইএসআই। সে দেশের সামরিক গুপ্তচর শাখার প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল নাদিম আহমেদ অঞ্জুমকে শুক্রবার ইমরানের অভিযোগ খারিজ করে বলেছেন, ‘‘উনি সেনার সমালোচনা করছেন, কারণ সেনা ওঁর কথা মতো অসাংবিধানিক কাজ করতে সম্মত হয়নি।’’
এর আগে একাধিক বার ইমরান প্রকাশ্যে অভিযোগ করেছেন, সেনা এবং আইএসআইয়ের চক্রান্তেই গত এপ্রিলে ক্ষমতাচ্যুত হতে হয়েছিল তাঁকে। এই প্রথম আইএসআই-এর তরফে সেই অভিযোগের প্রকাশ্য বিরোধিতা করা হল। লেফটেন্যান্ট জেনারেল অঞ্জুমের দাবি, ইমরান এবং তাঁর রাজনৈতিক সহযোগীরা নানা অসাংবিধানিক করতে সামরিক বাহিনীকে প্ররোচিত করেছিলেন। কিন্তু রাজনীতিতে না জড়ানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে, সে সব কাজ থেকে বিরত ছিলেন তাঁরা।
গত এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে প্রধানমন্ত্রী ইমরানের বিদায়ের নতুন করে আলোচনায় চলে এসেছিল পাক ফৌজ এবং আইএসআইয়ের ‘নেপথ্য ভূমিকা’র কথা। অতীতের মতো সরাসরি সেনা অভ্যুত্থান বা উর্দিধারীদের দাপাদাপি দেখা না গেলেও দেশ জুড়ে প্রবল রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য বিরোধী দলগুলির পাশাপাশি সেনার একাংশে সমর্থন ছিল বলে বিভিন্ন পাক সংবাদমাধ্যমও দাবি করেছিল সে সময়। পরে ইমরানের মুখেও একই অভিযোগ শোনা গিয়েছিল।
ঘটনাচক্রে, প্রধানমন্ত্রী ইমরান সেনাপ্রধান পদে কামার জাভেদ বাজওয়ার মেয়াদ দ্বিতীয় বার বাড়াতে গররাজি হওয়ার ইঙ্গিত দেওয়ার পরই তাঁর বিরুদ্ধে বিরোধী জোটের তৎপরতা বাড়ে। সেই সঙ্গে ছিল আইএসআই প্রধান নিয়োগ ঘিরে সংঘাত। প্রধানমন্ত্রী ইমরানের সুপারিশে ২০১৮-র জুনে আইএসআই-এর ডিজি পদে লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফৈজ হামিদকে নিয়োগ করেছিলেন জেনারেল বাজওয়া। গত নভেম্বরে তিনি হামিদকে সরিয়ে পাক গুপ্তচর সংস্থার দায়িত্ব দেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল অঞ্জুমকে। যদিও ইমরান চেয়েছিলেন হামিদকে বহাল রাখতে।
চলতি বছরের গোড়া থেকে যে ভাবে একের পর এক সহযোগী দল ইমরানের ‘পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ’ (পিটিআই)-এর সঙ্গ ছেড়েছিল, পাক ফৌজ এবং আইএসআইয়ের ‘ভূমিকা’ ছাড়া তা সম্ভব নয় বলে মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ। ঘটনাচক্রে, ২০১৮ সালে পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচনের সময় ইমরানের দলকে খোলাখুলি মদত জুগিয়েছিল পাক সেনা। তা নিয়ে সে সময় পাকিস্তান মুসলিম লিগ (এন), পাকিস্তান পিপলস পার্টির মতো দলগুলি প্রকাশ্যে অভিযোগও জানিয়েছিল। কিন্তু কয়েক বছর পরেই পরিস্থিতি বদলে যায়।