চাকরিপ্রার্থীদের অবস্থান বিক্ষোভ তুলে নেওয়ার অনুরোধ আগেই করা হয়েছিল বিধাননগর পুলিশের পক্ষে। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ ছিল, অনুরোধে কাজ না হওয়ায় শেষমেশ হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়। কিন্তু তাতেও ওঠেননি আন্দোলনকারীরা। অবশেষে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে তাঁদের ‘জোর করে’ তুলে দিল পুলিশ। ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণদের ধাপে ধাপে আটক করা হয়। তাঁদের বাসে করে সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় অন্যত্র। কয়েক জন আন্দোলনকারী অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁদের অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনাস্থলে ছিল র্যাফ এবং পুলিশের বিশাল বাহিনী। করুণাময়ীর যে জায়গায় গত তিন দিন ধরে অনশন বিক্ষোভ চালাচ্ছিলেন আন্দোলনকারীরা, সেই চত্বর হয়ে যায় একেবারে শুনশান।
তবে এত কিছুর পরেও নিজেদের অবস্থানে অনড় ছিলেন ২০১৭ সালের টেট উত্তীর্ণেরা। রাতে পুলিশ এসে তাঁদের সঙ্গে কথা বলে। কাউকে কাউকে বাসে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় অন্যত্র। তবে বেশির ভাগই রাতে নিরাপত্তার কারণে কোথাও যেতে রাজি হননি। পরে আরও পুলিশ আনা হয়। প্রথমে ২০১৭ সালের টেট উত্তীর্ণেরা পুলিশকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তাঁরা সকাল হলেই করুণাময়ী চত্বর ছেড়ে চলে যাবেন। কিন্তু শেষমেশ পুলিশ তাঁদের সকলকেই সরিয়ে দেয়।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ পুলিশ যখন আন্দোলনকারীদের তুলে দিচ্ছে জোর করে, ঘটনাস্থালে উপস্থিত বিরোধী দলের নেতা-কর্মীরা সকলে মিলে প্রথমে মানববন্ধন তৈরি করেন। পুলিশকে ওই ভাবে বাধা দিতে চেয়েও কোনও লাভ হয়নি। আন্দোলনকারীদের আটক করার আগে পুলিশের তরফে মাইক প্রচার করে উঠে যেতে বলা হয়। অনুরোধে কাজ না হওয়ায় উচ্চপদস্থ আধিকারিকের নির্দেশে পদক্ষেপ করে পুলিশ।
আন্দোলস্থলে উপস্থিত ছিলেন ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সভাপতি মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। আন্দোলনকারীদের আটক হওয়ার ঘটনায় তিনি বলেন, ‘‘এই আন্দোলন ভেঙে দিতে পুলিশ অনৈতিক ভাবে পদক্ষেপ করেছে। আমরা সারা রাজ্যব্যপী এই ঘটনার প্রতিবাদ জানাব। আন্দোলন চলবে।’’ পরে এসএফআই-ডিওয়াইএফআইয়ের তরেফে জানানো হয়, শুক্রবার আন্দোলনস্থলে ফের জমায়েত করা হবে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার টুইট করে রাজ্য সরকারের নিন্দা করছেন বিষয়টি নিয়ে। পুলিশ যখন তুলে নিয়ে যাচ্ছে, তখন এক আন্দোলনকারীকে চিৎকার করে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমাদের জোর করে তুলে দিল। যদি বেঁচে থাকি তবে আবার আসব এখানে।’’
করুণাময়ী এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা নিয়ে বিধাননগর পুলিশের বিরুদ্ধে শুক্রবার হাইকোর্টে আবেদন করবেন বলে জানিয়েছেন বিজেপি নেত্রী প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল। আন্দোলনকারীদের প্রতি পুলিশি পদক্ষেপ নিয়ে তাঁরা আদালতে যাবেন বলে জানিয়েছেন বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পালও।