পদত্যাগ করলেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রস। ছ’সপ্তাহ আগেই ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি। তবে এই ছ’সপ্তাহের মধ্যেই তাঁর অর্থনীতি সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত সমালোচনার মুখে পড়ে। বৃহস্পতিবারই তিনি ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন বলে সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর। তবে লিজ প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে তাঁর নিজের দল কনজার্ভেটিভ পার্টির অন্দরেই তাঁর পদত্যাগের দাবি তীব্র হচ্ছিল। অবশেষে বৃহস্পতিবার ইস্তফা দিলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে লিজের প্রতিদ্বন্দ্বী ছলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত আর এক কনজার্ভেটিভ প্রার্থী ঋষি সুনক। তবে শেষ পর্যায়ের লড়াইয়ে দলীয় সদস্যদের থেকে অধিক সমর্থন পেয়েই অনেকখানি এগিয়ে যান লিজ। পিছিয়ে পড়েন ঋষি। বৃহস্পতিবারের পর প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তবে কি নতুন করে আবার সুযোগ পেতে পারেন ঋষি? ট্রস অবশ্য তাঁর বিদায়ী ভাষণে এ ব্যাপারে জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার তাঁর ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটের বাসভবনের সামনে দাঁড়িয়ে ট্রস বলেন, পরবর্তী নেতৃত্ব বেছে নেওয়ার আগে পর্যন্ত তিনিই দায়িত্ব সামলাবেন। তবে আগামী সপ্তাহেই হবে নির্বাচন। ট্রস বলেন ‘‘আজ সকালেই পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী বেছে নেওয়ার ব্যাপারে আমার কথা হয়েছে ১৯২২ কমিটির চেয়ারম্যান স্যর গ্রাহাম ব্র্যাডির সঙ্গে। পরবর্তী নেতৃত্ব বেছে নেওয়ার জন্য আগামী সপ্তাহেই একটি নির্বাচন হতে চলেছে। দেশের নিরাপত্তা যাতে কোনও ভাবেই বিঘ্নিত না হয় তা নিশ্চিত করবে ওই নির্বাচনে জয়ী হয়ে আসা পরবর্তী নেতৃত্ব।’’
প্রসঙ্গত, এই সিদ্ধান্তের পর ব্রিটেনের ইতিহাসে সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত মেয়াদের প্রধামন্ত্রী হলেন ট্রস। শপথ নেওয়ার দিন থেকে ইস্তফা পর্যন্ত মাত্র ৪৫ দিন কাজ করলেন তিনি।
বৃহস্পতিবার লিজ ইস্তফা দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগেই পদত্যাগ করেন তাঁর সহকর্মী ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুয়েলা ব্রেভারম্যান। নতুন প্রধানমন্ত্রীর সরকার চালানোর ব্যর্থতা নিয়ে পর পর আক্রমণের মুখেই পদত্যাগ করেন সুয়েলা। তার পরেই ইস্তফা দেন লিজও।
দিন কয়েক আগেই দেশের আর্থিক ‘ডামাডোলের’ জেরে লিজ তাঁর অর্থমন্ত্রীকে বরখাস্ত করেছিলেন। লিজের সেই সিদ্ধান্তও সমালোচনার মুখে পড়ে। কনজার্ভেটিভ পার্টিতে লিজের সহকর্মীরাই বলেছিলেন, ‘‘অর্থমন্ত্রীর উপর নিজের ব্যর্থতার দায় চাপালেন লিজ। তাঁকে বলির পাঁঠা করা হল।’’ এই পরিস্থিতির মধ্যেই বৃহস্পতিবার ইস্তফা দিলেন লিজ।