‘বিশ্বাসঘাতক একনায়ক’, জিংপিংয়ের বিরুদ্ধে চিনের ‘ব্রিজ ম্যান’ -এর বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ল গোটা বিশ্বে

চলতি সপ্তাহেই চিনের কমিউনিস্ট পার্টির ২০ তম কংগ্রেস আয়োজিত হবে। তার ঠিক আগে গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ল প্রেসিডেন্ট জিংপিং বিরোধী বিক্ষোভ। শুরুটা করেছিলেন এক চিনা। বেজিংয়ের রাস্তায় ‘বিশ্বাসঘাতক একনায়ক’ পোস্টার নিয়ে বিক্ষোভ দেখান তিনি। কমিউনিস্ট পার্টির পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে গ্রেফতার করে। কিন্তু ততক্ষণে ছড়িয়ে পড়েছে সেই বার্তা। সিপিসি বসার আগে আমেরিকা, ইংল্যান্ড, ইউরোপ, অষ্ট্রেলিয়া-সহ বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখা যাচ্ছে জিংপিং বিরোধী পোস্টার, বিক্ষোভ সমাবেশ।

দু’ দিন বাদেই চিনা কমিউনিস্ট দলের পার্টি কংগ্রেস শুরু হবে৷ এই পার্টি কংগ্রেসেই তৃতীয় বারের জন্য চিনের প্রেসিডেন্ট পদে জিনপিংয়ের নির্বাচিত হওয়ার কথা৷ তার ঠিক আগে মূলত জিনপিং সরকারের কঠোর কোভিড নিয়ন্ত্রণ নীতির বিরোধিতা করেই এই বিক্ষোভ প্রদর্শিত হয়৷ বেজিংয়ের সিটং সেতুতে ঝুলিয়ে দেওয়া হয় দু’টি বড় বড় ব্যানার৷ তার মধ্যে একটি ব্যানারে লেখা ছিল, ‘কোভড পরীক্ষায় না বলুন৷ খাবার দাবি করুন৷ লকডাউন মানবেন না, স্বাধীনতা চান৷ মিথ্যেকে সমর্থন নয়, আত্মসম্মানের পক্ষে থাকুন৷ কোনও সাংস্কৃতিক আন্দোলন নয়, সংস্কারের পক্ষে আওয়াজ তুলুন৷ মহান কোনও নেতাকে সমর্থন নয়, ভোটের পক্ষে মত দিন৷ ক্রীতদাস হয়ে থাকবেন না, নাগরিক হিসেব বাঁচুন৷’ অন্য একটি ব্যানারে লেখা ছিল, ‘ধর্মঘট করুন, একনায়ক এবং জাতীয় বিশ্বাসঘাতক শি জিনপিং-কে ক্ষমতাচ্যুত করুন৷’

সঙ্গে সঙ্গে সেই সমস্ত পোস্টার, ব্যানারের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়৷ চিনের নাগরিকদের মধ্যেও জোর চর্চা শুরু হয়৷ এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই চিনের পুলিশ- প্রশাসন তা ধামাচাপা দিতে তৎপর হয়ে ওঠে৷ একদিকে চিনা প্রশাসন যাবতীয় সামাজিক মাধ্যম এবং সংবাদমাধ্যম থেকে এই বিক্ষোভ সংক্রান্ত ছবি, খবর সরাতে তৎপর হয় ওঠে৷ অন্যদিকে চিনা পুলিশ দাবি করে, এমন কোনও ঘটনাই ঘটেনি৷ যে টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে এই বিক্ষোভের ছবি পোস্ট করা হয়েছিল, তার কয়েকটিকে ব্লকও করে দেওয়া হয়৷

২০১২ সালে প্রথমবার ক্ষমতায় আসেন শি জিনপিং৷ আগামী রবিবার পার্টি কংগ্রেস শেষে দলের নেতা হিসেবে তৃতীয় বারের জন্য প্রেসিডেন্ট পদে বসার কথা তাঁর৷ এই মুহূর্তে অতিমারী নিয়ন্ত্রণ নীতির অংশ হিসেবে লক্ষ লক্ষ মানুষকে কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বাধ্য করেছে শি জিনপিং সরকার৷ যা নিয়ে চিনের সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে৷ শুধু চিন নয়, এবার সেই ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ল গোটা বিশ্বেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.