আবার তিমির গণ-আত্মহত্যার ঘটনা। অস্ট্রেলিয়ার পর এ বার ঘটনাস্থল নিউজিল্যান্ডের প্রত্যন্ত দ্বীপ। কী কারণে তিমিরা এমন গণ-মৃ্ত্যুর মুখে পড়ে, তার ঠিক কারণ আজও অজানা। এ ক্ষেত্রে তিমির দল ফেরার পথ হারিয়ে ফেলেছিল বলে মনে করা হচ্ছে। পরিস্থিতি এমনই যে, ওই সমুদ্র উপকূল এলাকায় উদ্ধারেও নামতে পারছেন না কর্মীরা, কারণ, ওই এলাকায় সাগরের জলে কিলবিল করছে হাঙরের দল।
নিউজিল্যান্ডের চ্যাথাম দ্বীপ। সে দেশের মূল ভূখণ্ড থেকে দূরত্ব ৮৪০ কিলোমিটার। সেই দ্বীপের উপকূলেই এখন পা ফেলা দায়। কারণ গোটা উপকূল ভরে ছড়িয়ে আছে অন্তত পাঁচশো অতিকায় পাইলট হোয়েলের মৃতদেহ। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, হাঙরের ভরা ওই সমুদ্রে কোনও ভাবে পথ হারিয়েছে বা আটকে পড়েছে অতিকায় তিমিরা। তার অনিবার্য পরিণতিতে গণ-মৃত্যুর ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। যদিও এই এলাকায় তিমির গণ-মৃত্যুর ঘটনা নতুন কোনও ব্যাপার নয়। এর আগেও একাধিক বার পাইলট হোয়েল বা তিমির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। ১৯১৮-য় এই এলাকায় এক হাজারেরও বেশি তিমি মারা গিয়েছিল। ২০১৭-তেও এই তটে সাতশো তিমির মৃত্যু হয়।
স্থানীয় সূত্রে খবর, চ্যাথামের আশেপাশের সমুদ্রে হাঙরের আনাগোনা। তাই তটের দিকে ছুটে আসা তিমিদেরও যেমন সমস্যা, তেমনই বিপদ উদ্ধারকারী দলেরও। অনেক ভেবে সেখানকার বিশেষজ্ঞরা স্থির করেছেন, মৃত্যুপথযাত্রী তিমিগুলিকে অসাড় করে দিয়ে মৃত্যুর যন্ত্রণা কমানোর চেষ্টা হবে। সেই অনুযায়ী, তিমিগুলিকে অজ্ঞান করে দেওয়া হচ্ছে।
এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে এমন ঘটনা পর পর দু’বার ঘটল। এর আগে অস্ট্রেলিয়ার তাসমানিয়া উপকূলেও অন্তত ২০০টি পাইলট হোয়েলের মৃত্যু হয়েছিল। তার পর মাস ঘোরার আগেই আবার ঝাঁকে ঝাঁকে তিমির মৃত্যুর ঘটনা চ্যাথামে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাইলট হোয়েলদের আটকে পড়ার ঘটনা নতুন নয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে লক্ষ্যণীয় হল তাদের ব্যবহার। বিজ্ঞানীদের একটি অংশ মনে করেন, সেই সব পাইলট হোয়েলই তটের দিকে ছুটে এসে আত্মহত্যা করে যাদের বয়স হয়েছে এবং তারা স্বাভাবিক আয়ুর শেষ সীমায় পৌছেছে। কিন্তু গণ-মৃত্যুর ক্ষেত্রে কী কী কারণ রয়েছে, তা এখনও অজানা।
চ্যাথামে ৬০০ মানুষের বাস। এই এলাকা নিউজিল্যান্ডের অন্যতম যেখানে মাঝে মাঝেই তিমিদের দলবেধে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। কিন্তু এই এলাকাটিকেই কেন বেছে নেয় তিমিরা? কী এমন আকর্ষণ রয়েছে চ্যাথামের সমুদ্র উপকূলে? কারণ খুঁজছেন বিজ্ঞানীরা।