কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কে হবেন? মুখ্যমন্ত্রী এবং আচার্যের সঙ্গে বৈঠকে নেওয়া হবে সিদ্ধান্ত

দেশের শীর্ষ আদালতের রায়ে সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় আর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নন। সে ক্ষেত্রে দেশের মধ্যে অগ্রগণ্য ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উপাচার্যের দায়িত্ব কাকে দেওয়া হবে? নবান্ন সূত্রের খবর, পরবর্তী উপাচার্য কে হবেন, তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যপাল তথা রাজ্যের সমস্ত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য লা গণেশনের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। ওই বৈঠকেই শিক্ষা দফতর পরবর্তী উপাচার্য সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেবে। মঙ্গলবার রাজ্য শিক্ষা দফতর সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্য পদে আর পুনর্নিয়োগ করা যাবে না সোনালিকে। কলকাতা হাইকোর্টের এই রায় মঙ্গলবার বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার শীর্ষ আদালতে মামলাটি উঠেছিল। সেখানেই বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি হিমা কোহলির বেঞ্চ জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল, যিনি রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য, তাঁর ক্ষমতায় ‘হস্তক্ষেপ করে’ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে দ্বিতীয় বারের মেয়াদে বসানো হয়েছিল সোনালিকে। ফলে ওই বিষয়ে কলকাতা হাই কোর্টের রায়ই বহাল থাকবে। প্রসঙ্গত, কলকাতা হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছিল রাজ্য সরকার। দেশের শীর্ষ আদালত কলকাতা হাইকোর্টের রায় বহাল রাখায় রাজ্য সরকারও ওই সিদ্ধান্ত নিয়ে ধাক্কা খেল।

কিন্তু সোনালির দ্বিতীয় বারের মেয়াদে নিয়োগ খারিজ হয়ে যাওয়ার পরেই প্রশ্ন উঠেছে, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে কাকে নিয়োগ করা হবে। শিক্ষা দফতরের একটি সূত্রের দাবি, আপাতত কাউকে অস্থায়ী ভাবে উপাচার্যের দায়িত্ব নিয়ে নতুন উপাচার্য নিয়ে আলাপ-আলোচনা শুরু করতে চায় রাজ্য সরকার। সার্চ কমিটির সুপারিশ-সহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হবে। ওই সমস্ত বিষয় নিয়েই মুখ্যমন্ত্রী এবং আচার্য তথা রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠক করবেন শিক্ষামন্ত্রী। ওই বৈঠকে পরবর্তী উপাচার্যের নাম নিয়ে আলোচনা হতে পারে। তবে সেই বৈঠক কবে হবে, তা নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি শিক্ষা দফতর।

২০২১ সালের ২৭ অগস্ট কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে সোনালির মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল। তৎকালীন রাজ্যপাল তথা আচার্য জগদীপ ধনখড়ের কাছে প্রস্তাব যায় সোনালিকে পুনর্নিয়োগের জন্য। তিনি প্রশাসনের কাছে ওই সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা চেয়েছিলেন। সেই ব্যাখ্যা না দিয়েই সোনালিকে পুনর্বহাল করেছিল রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতর। সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেন আইনজীবী অনিন্দ্যসুন্দর দাস। গত ১২ সেপ্টেম্বর হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানায়, সোনালিকে দ্বিতীয় বার উপাচার্য পদে বহাল করার এক্তিয়ার নেই রাজ্যের। ওই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন সোনালি। পাশাপাশি রাজ্য সরকারও সেই মর্মে আবেদন করে সুপ্রিম কোর্টে। মঙ্গলবার সেই মামলারই রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.