শাহবাজ়রা বুঝিয়ে দিচ্ছে ভারতের প্রতিভার গভীরতা

রাঁচীর ঝাড়খণ্ড ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আবার ভারতীয় দলের ব্যাটিং মহিমা টের পাওয়া গেল। বেশ কঠিন একটা লক্ষ্য ভারতীয় দল সহজেই তুলে দিল। হাতে প্রচুর উইকেট আর বেশ কয়েকটা ওভার রেখে।r

শ্রেয়স আয়ার দারুণ একটা সেঞ্চুরি করল। আর স্থানীয় ছেলে ঈশান কিশান অল্পের জন্য সেঞ্চুরি ফস্কাল। সঞ্জু স্যামসন বুঝিয়ে দিল, কেন ওকে একই সঙ্গে অন্যতম আকর্ষণীয় এবং ধ্বংসাত্মক ব্যাটসম্যান বলা হয়। শুভমন গিলকে বেশ ছন্দে দেখাচ্ছিল। মনে হচ্ছিল, বড় রানের দিকে যাচ্ছে। কিন্তু নিজের বলে কাগিসো রাবাডা একটা অসাধারণ ক্যাচ নিয়ে ফিরিয়ে দিল গিলকে।

অধিনায়ক শিখর ধাওয়ান আবার ব্যর্থ হল। ওর ব্যর্থতা দলের মধ্যে চিন্তার মেঘ আনতে পারত, কিন্তু এই দলে এতই প্রতিভা রয়েছে আর শ্রেয়স-ঈশান এতটাই দায়িত্ব নিয়ে খেলে গেল যে, ধাওয়ানের রান না পাওয়াটা সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়নি। অধিনায়ক হিসেবে অবশ্য ধাওয়ানকে দেখে বেশ ভাল লাগছে। বোলাররা রান দিলেও তাদের পাশে থেকেছে। পিঠে হাত রেখে সাহস জুগিয়েছে। বোলাররাও তেতে উঠেছে। অধিনায়কের হাসিখুশি মেজাজও নিঃসন্দেহে ড্রেসিংরুমের পরিবেশ তরতাজা রেখেছে।

অধিনায়ক হিসেবে ধাওয়ানের একটা ভুল চোখে পড়েছে। কুলদীপ যাদব যখন এডেন মার্করামের বিরুদ্ধে ভাল বল করছিল, তখন ওকে সরিয়ে নেয়। মার্করামের বিরুদ্ধে অতীতে কিন্তু বেশ কয়েক বার সফল হয়েছে কুলদীপ। এ ছাড়া কিন্তু ধাওয়ানের নেতৃত্বে দলের মধ্যে একটা ইতিবাচক মনোভাব ধরা পড়েছে।

অভিষেকে শাহবাজ় আহমেদকেও বেশ ভাল লাগল। ছেলেটা যত খেলবে, তত উন্নতি করবে। একটা জিনিস দেখে ভাল লাগছে। ভারতীয় দলে এখন বেশ কয়েক জন এমন বাঁ-হাতি স্পিনার আছে, যারা মাঝের সারিতে নেমে ব্যাটটাও করে দিতে পারে। ভারতীয় দলের প্রতিভার গভীরতা যে কতটা, তা বোঝানোর জন্য এটা একটা ভাল নিদর্শন।

আগের ম্যাচে নতুন বলের বোলাররাও খুব ভাল বল করল। বিশেষ করে মহম্মদ সিরাজ। প্রায় প্রতিটা ডেলিভারিতে ও ব্যাটসম্যানদের সমস্যায় ফেলছিল। লখনউ ম্যাচের পরে আবেশ খানের ভাল প্রত্যাবর্তন ঘটল। আর শার্দূল ঠাকুর তো বরাবরের মতোনির্ভরযোগ্য ছিল।

দ্বিতীয় ম্যাচের সকালে সরে দাঁড়ায় দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। তাতে অবশ্য কোনও তফাত হয়নি। ওর জায়গায় নামা রিজ়া হেনড্রিক্স দারুণ একটা ইনিংস খেলে গেল। ওর আর মার্করামের একশো রানের বেশি জুটিটা একটা ভাল মঞ্চ তৈরি করে দিয়ে গেল পরের দিকের ব্যাটসম্যানদের জন্য।

ওই সময় মনে হচ্ছিল, দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ৩০০ পেরিয়ে যাবে। সেটা হয়নি ভারতীয় বোলাররা আঁটসাঁট বোলিং করায়। ডেভিড মিলার আগের দিন ওর এক খুদে ভক্তকে হারিয়েছিল। মিলারের ব্যাটিং দেখে মনে হল, সেই ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারেনি। আগের ম্যাচগুলোর মতো টাইমিং করতে পারছিল না।

আজ, মঙ্গলবার দিল্লিতে সিরিজ়ের শেষ ম্যাচের আগে একটা অস্বস্তিকর প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়ে আছে দক্ষিণ আফ্রিকা। বাভুমা যদি সুস্থ হয়ে যায়, তা হলে কী হবে?

সৌভাগ্যবশত, ভারতের এ রকম কোনও সমস্যা নেই। যদি আদৌ কোনও সমস্যা থেকে থাকে, তা হলে সেটা হল, অতিরিক্ত বিকল্প ক্রিকেটার হাতে থাকা। সেই সমস্যাটা কিন্তু সব সময় ভাল। যেখানে কাকে বাদ দেওয়া যাবে, সেটা বড় চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায় কাকে নেওয়া যাবে-র থেকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.