চাঁদের সৃষ্টিতত্ত্ব নিয়ে গবেষণায় নতুন তথ্য উঠে এল বিজ্ঞানীদের হাতে। গবেষকদের দাবি, পৃথিবীর এই উপগ্রহটি তৈরি হতে শতাব্দীর পর শতাব্দী সময় লাগেনি। মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই চাঁদের সৃষ্টি হয়েছিল।
চাঁদের সৃষ্টিতত্ত্ব নিয়ে পূর্বেও বহু গবেষণা হয়েছে। কিন্তু ঠিক কী ভাবে এই উপগ্রহ তৈরি হয়েছে, তার খুঁটিনাটি তথ্য অনেকাংশেই রহস্যে মোড়া। সম্প্রতি একটি গবেষণায় চাঁদের উৎস সম্পর্কে নতুন তথ্য জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
ব্রিটেনের ডারহ্যাম ইউনিভার্সিটির অধীন ইনস্টিটিউট ফর কম্পিউটেশনাল কসমোলজির এক দল গবেষক জানিয়েছেন, চাঁদের সৃষ্টি হয়েছিল মাত্র কয়েক ঘণ্টায়। তাঁদের দাবি, পৃথিবীর সঙ্গে থিয়া নামের এক মহাজাগতিক বস্তুর ধাক্কার পরপরই চাঁদের সৃষ্টি হয়। থিয়ার আকার প্রায় মঙ্গল গ্রহের সমান।
পৃথিবীর সঙ্গে থিয়ার সংঘর্ষ ছিল তীব্র। ডারহ্যাম ইউনিভার্সিটির গবেষকরা কৃত্রিম ভাবে মডেল হিসাবে অতীতের সেই মহাজাগতিক ঘটনার পুনর্নিমাণ করে দেখিয়েছেন। তাতে দেখা গিয়েছে, তীব্র সংঘর্ষে পৃথিবী এবং থিয়া থেকে ছিটকে বেরিয়ে এসেছিল পদার্থ। তা পৃথিবীকে কেন্দ্র করে নির্দিষ্ট কক্ষপথে ঘুরতে শুরু করেছিল সঙ্গে সঙ্গেই। গোটা প্রক্রিয়ায় সময় লেগেছিল কয়েক ঘণ্টা। এই গবেষণার তত্ত্ব প্রকাশিত হয়েছে ‘দ্য অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল লেটার্স’-এ।
চাঁদের সৃষ্টি হয়েছিল প্রায় সাড়ে চারশো কোটি বছর আগে। সাধারণ ভাবে মনে করা হয়, পৃথিবীতে বড়সড় কোনও আলোড়নের ফলে তার উপাদান ছিটকে বেরিয়ে চাঁদের সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু, কেন চাঁদের গঠনের সঙ্গে পৃথিবীর গঠনের এত মিল, তা নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে ধন্দ রয়েছে। এখনও সেই রহস্য পুরোপুরি সমাধান করা যায়নি। ডারহ্যাম ইউনিভার্সিটির গবেষণা চাঁদের উৎপত্তি রহস্যে আলো দেখাতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
নাসার দাবি, চাঁদের সৃষ্টিতত্ত্ব নিয়ে এই আলোচনা এবং গবেষণা পৃথিবীর পক্ষেও কার্যকরী। কী ভাবে পৃথিবীতে মানুষের আবির্ভাব হল, তা বুঝতে বিজ্ঞানীদের সাহায্য করবে চাঁদ নিয়ে এই ধরনের গবেষণা।