পশ্চিমবঙ্গকে পশ্চিম বাংলাদেশ বানানোর চেষ্টা চলছে, এই অভিযোগ করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। আজ মেটিয়াবুরুজের মোমিনপুরে যাওয়ার পথে সল্টলেকেই সুকান্তবাবুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার প্রতিক্রিয়া সুকান্তবাবু বলেন, “মোমিনপুরের ঘটনার কথা যাতে আমরা জনগণের কাছে তুলে ধরতে না পারি, সেই কারণেই আমাদের আটকানো হয়েছে।”
সোমবার মেটিয়াবুরুজের মোমিনপুরের উত্তপ্ত এলাকায় যাচ্ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁর সঙ্গে ছিলেন, সাংসদ উমেশ রাই, রাজ্য সম্পাদক আর কে হান্ডা। কিন্তু সল্টলেকের চিংড়িঘাটার মোড়ে আগে থেকেই ব্যারিকেড করে দাঁড়িয়ে ছিল বিশাল পুলিশবাহিনী। সেখানে পৌছানোর পর কড়া নিরাপত্তার মাঝে সুকান্ত মজুমদার সহ বিজেপি নেতাদের গ্রেফতার করে পুলিশ। তার পর তিনি সংবাদমাদধ্যমে এই মন্তব্য করেন। ভিডিওবার্তায় তিনি বলেন, “গত ৪৮ ঘন্টা ধরে মোমিনপুরে সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনা ঘটছে। আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলাম। দূর্ভাগ্যের বিষয় গত ৪৮ ঘন্টা ধরে যে পুলিশ টেবিলের নিচে লুকিয়ে থাকল, থানা থেকে বার হতে পারল না, থানা দখল হয়ে গেল, সেই পুলিশ মোমিনপুর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে সল্টলেকের চিংড়িঘাটার মোড়ে আমার গাড়ি আটকে দিল। উদ্দেশ্য হল, মোমিনপুরে যে আক্রান্ত হিন্দুদের এলাকাচ্যুত করার চেষ্টা চলছে, সেখানে আমি যেন যেতে না পারি।“
আমরা ঘটনাস্থলে গেলে প্রচারমাধ্যমে উঠে আসত কীধরণের জঘন্য হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেছে মোমিনপুরে। কীধরণের আক্রমণ হয়েছে সেখানকার সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর। সেখানে যাঁদের ওপর অত্যাচার করা হয়েছে, তাঁরা তফশিলি উপজাতিভূক্ত মানুষ।“ গ্রেফতারের পর সুকান্ত মজুমদার সহ বিজেপি নেতাদের লালবাজারে নিয়ে যাওয়া হয়।
মোমিনপুরে ভাঙ্গচুর চালানোর সময়ের ছবি।
প্রসঙ্গত, রবিবার লক্ষ্মীপুজোর দিন দক্ষিণ কলকাতার মোমিনপুরে একটি দোকান ও একাধিক বাইক ভাঙ্গচুরের অভিযোগ প্রকাশ্যে আসে। এরপরই ভাঙ্গচুর চালানো হয় ইকবালপুর থানা এলাকায়। অনেকে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। রাতে এই নিয়ে টুইট করে প্রতিবাদ জানান একাধিক বিজেপি নেতারা। সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষ, তরুণজ্যোতি তিওয়ারিরা টুইট করেন। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি লেখেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। যত শীঘ্র সম্ভব কলকাতার মোমিনপুর, ইকবালপুরে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার দাবি তোলেন তিনি।
মোমিনপুরের ঘটনার সাথে জড়িত অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন বিজেপি-র পশ্চিমবঙ্গের পর্যবেক্ষক তথা বিহারের প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মঙ্গল পাণ্ডে। সোমবার তিনি টুইটারে লেখেন, “পশ্চিমবঙ্গে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের নির্দেশে, অপরাধীরা সামাজিক ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য মানুষের উপর ঘাতক হামলা চালাচ্ছে। মোমিনপুরের ঘটনার সাথে জড়িত অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠাতে হবে।“