‘বিজেপির সমালোচনা করে দল ভাঙানোর পুরোনো খেলা চালাচ্ছেন মমতা’, আক্রমণাত্মক প্রদীপ

তাদের ভাঙা সংসারে ফের থাবা বসিয়েছে তৃণমূল৷ প্রদেশ কংগ্রেসের সিনিয়র নেতা ওমপ্রকাশ মিশ্রকে বুধবার দলে টেনে নিয়েছে তারা৷ সেই ক্ষোভেই তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একহাত নিলেন কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য৷ তিনি বললেন, দল ভাঙানোর জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপির সমালোচনা করছেন অথচ তিনি নিজেই সেই খেলা চালিয়ে যাচ্ছেন৷

বুধবার দুপুরে রাজ্যের পরিবহণ ও সেচমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে বিধানসভায় যান ওমপ্রকাশ মিশ্র৷ প্রথমেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন এই বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা। তারপর মমতা নিজেই ওমপ্রকাশবাবুর যোগদানের কথা ঘোষণা করেন। তৃণমূলনেত্রী জানিয়েছেন, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তথা কংগ্রেস নেতাকে দলের এডুকেশন সেলের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি তৃণমূলের কোর কমিটিতেও নেওয়া হবে তাঁকে।

উল্লেখ্যযোগ্য বিষয়, এদিন ওমপ্রকাশ যখন তৃণমূলে যোগ দিচ্ছিলেন তখন লোকসভার দলনেতা হওয়ার জন্য সোমেন মিত্ররা বিধানসভায় ডেকে সংবর্ধনা দিচ্ছেন অধীররঞ্জন চৌধুরীকে। সেইসময় প্রদীপ ভট্টাচার্যও ছিলেন সেখানে৷

ওমপ্রকাশ প্রসঙ্গে প্রদীপ ভট্টাচার্যের মন্তব্য, “মুখ্যমন্ত্রী যখন বিজেপির দল ভাঙানোর বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন, মনে হয়েছিল ওঁর বোধোদয় হয়েছে। কিন্তু বিধানসভায় যে ভাবে নিজের ঘরেই কংগ্রেস ভাঙানোর কাজে যুক্ত হয়ে গেলেন, তাতে বোঝা গেল পুরনো খেলা থেকে তিনি সরেননি! এর দাম ওঁর দলকেও দিতে হবে।”

তবে নীতিগত সমস্যাতেই কংগ্রেস ছেড়েছেন বলে দাবি করেছেন ওমপ্রকাশ মিশ্র৷ তিনি ২৩ মের আগে ও পরে সারা দেশের রাজনীতিতে একটা বড় পরিবর্তন চলে এসেছে৷ বিজেপিকে হারানোর মূল উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই এখন ভারতবর্ষে লড়াই৷ সেই লড়াইয়ে তৃণমূল কংগ্রেস একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে৷ সেই ভূমিকাটাকে সম্মান জানানোর মধ্য দিয়ে জাতীয় কংগ্রেসের পদক্ষেপগুলি গ্রহণ করা উচিত ছিল৷ কিন্তু যা হচ্ছে তাতে বিজেপিকে শক্তিশালী করা হচ্ছে৷

এরাজ্যের কংগ্রেস নেতৃত্ব সিপিএমের সঙ্গে জোট ভেঙে দিয়ে বিজেপির সুবিধা করল৷ আমি তার প্রতি করেছিলাম৷ দলীয় পদ থেকে ইস্তফাও দিয়েছিলাম৷ একমাস পর সোমেনদা আমার পদত্যাগ গ্রহণ করেন৷

তাঁর কথায়, ” এরপর আমার আর কোনও দায়বদ্ধতা থাকার কথা নয়। তাই তৃণমূলের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হলাম। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আমার কথা হয়৷উনি আমাকে কিছু দায়িত্ব দিয়েছেন। সেগুলো পালন করব।”

ওমপ্রকাশ তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন শুনে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র বলেন, “উনি তো কংগ্রেসে নেই।

ভোটের আগে উনি বামেদের সঙ্গে কংগ্রেসের জোট চেয়েছিলেন। কিন্তু ভোটের পরে বলেছিলেন, তৃণমূলের সঙ্গে জোট হওয়া উচিত! আর ওমপ্রকাশবাবু যে মতামত ব্যক্ত করেছেন, তা প্রদেশ কংগ্রেসের গৃহীত পন্থা বিরোধী। এআইসিসি তা অনুমোদন করেনি। উনি পদত্যাগ করেছিলেন। তা গৃহীত হয়েছে। তাঁকে তা জানিয়েও দেওয়া হয়েছে। এআইসিসি’র নিয়মানুযায়ী, কেউ পদত্যাগ করলেই, তাঁকে বহিষ্কার করা হয়। সেটাই ওমপ্রকাশবাবুর ক্ষেত্রেও হয়েছে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.