গঙ্গাদূষণ রুখতে ব্যতিক্রমী উপায় অবলম্বন করল টালা প্রত্যয় পুজো কমিটি। গঙ্গায় প্রতিমা নিরঞ্জন করার বদলে মণ্ডপেই হোসপাইপ দিয়ে প্রতিমা গলিয়ে ধুয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন উত্তর কলকাতার অন্যতম বিখ্যাত এই পুজোর উদ্যোক্তারা। সেই সিদ্ধান্ত মোতাবেক দমকল বিভাগের সহায়তায় মণ্ডপের ভিতরেই ধুয়ে ফেলা হল প্রতিমা। উদ্যোক্তাদের তরফে ধ্রুবজ্যোতি বিশ্বাস এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে বলেন, “আমরা চাইনি টালা প্রত্যয়ের তরফে এ বার এক কুচো ফুল কিংবা মাটির টুকরো গঙ্গায় ফেলে দেওয়া হোক। তাই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দমকল বিভাগ এবং কলকাতা পুরসভার সহায়তায় আমরা আমাদের পরিকল্পনা সার্থক ভাবে রূপায়িত করতে পারলাম।” এই কাজের জন্য মণ্ডপের ভিতরেই অস্থায়ী জলাধার নির্মাণ করা হয়।
উদ্যোক্তাদের তরফে জানানো হয়, হোসপাইপের জলধারা দিয়ে ৪৩ ফুটের প্রতিমাকে ধুয়ে ফেলার পর অবশিষ্ট মাটি জলাধারের নীচে পড়ে থাকবে। উপরের স্তরের জল নির্দিষ্ট নালা দিয়ে বেরিয়ে যাবে। পরে অবশ্য সেই মাটিকেও অন্য কাজে লাগানো হবে বলে জানিয়েছেন টালা প্রত্যয়ের কর্তারা। তবে, মূল প্রতিমাকে অভিনব উপায়ে নিরঞ্জন করা হলেও, তুলনায় ছোট একটি প্রতিমা নিয়ে শনিবারের দুর্গাপুজো কার্নিভালে অংশগ্রহণ করবে টালা প্রত্যয়। তার জন্য তারা আলাদা করে ১০ ফুটের ফাইবার গ্লাসের প্রতিমা নির্মাণ করে রেখেছে। রেড রোড কার্নিভালে প্রদর্শিত হওয়ার পর সেই প্রতিমাটিকে টালা প্রত্যয়ের পুজো প্রাঙ্গণে রেখে দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, হোসপাইপের মাধ্যমে তীব্র জলধারা দিয়ে দুর্গাপ্রতিমার নিরঞ্জন করা ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ হলেও, একেবারে অভিনব নয়। ২০২০ সালে একই ভাবে প্রতিমা নিরঞ্জন করে নজির গড়েছিল দক্ষিণ কলকাতার অন্যতম বিখ্যাত পুজো কমিটি ত্রিধারা। সে অর্থে ত্রিধারার পথই অনুসরণ করল টালা প্রত্যয়। নিরঞ্জন দেখতে মণ্ডপে উপস্থিত কল্যাণী পোদ্দার বললেন, “এত বয়স হয়ে গেলেও এ ভাবে প্রতিমা নিরঞ্জন আমি কোনওদিন দেখিনি। পরিবেশের কথা মাথায় রেখে সকল পুজো কমিটিরই এ ভাবে প্রতিমা নিরঞ্জন করা উচিত।”