‘সকালে দুটো রুটি, রাতে তা-ও জোটে না’, জেলের বিরুদ্ধে খেতে না দেওয়ার অভিযোগ শান্তিপ্রসাদের

জেলে তাঁকে খেতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করলেন শান্তিপ্রসাদ সিংহ। এসএসসির নিয়োগ সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির প্রাক্তন প্রধান এ ব্যাপারে আদালতের কাছে নালিশ জানিয়েছেন জেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। তাঁর অভিযোগ, দিনে যা-ও বা দু’টি রুটি খেতে দেওয়া হয়, রাতে সেটুকুও জোটে না। বস্তুত, জেলে তাঁকে দিনে চার বেলা খাবার দেওয়ার বদলে তাঁকে স্রেফ দু’বেলা খেতে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ করেছেন শান্তিপ্রসাদ।

বুধবার এসএসসি সংক্রান্ত শান্তি প্রসাদের মামলাটির শুনানি ছিল আদালতে। জামিনের আবেদনও করেছিলেন শান্তিপ্রসাদের আইনজীবী সঞ্জয় দাশগুপ্ত। তখনই আদালতকে তিনি বলেন, জেলে পর্যাপ্ত খাবার দেওয়া হচ্ছে না শান্তিপ্রসাদকে। এমনকি যথাযথ চিকিৎসাও পাচ্ছেন না তিনি।

সত্তরোর্ধ্ব শান্তি প্রসাদের অসুস্থতার কথা জানিয়ে এর আগেও বহুবার জামিনের আবেদন করা হয়েছে আদালতে। তাঁকে যে নানা রকম ওষুধ খেতে হয়, সে কথাও জানানো হয়েছিল বিচারককে। কিন্তু আদালত কখনওই সেই সব যুক্তিতে আমল দেয়নি। এ বার অবশ্য সরাসরি জেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেই সত্তরোর্ধ্ব বন্দিকে অযত্ন করার অভিযোগ আনলেন শান্তিপ্রসাদের আইনজীবী। বুধবার তিনি আদালতকে বলেন, ‘‘সকালে দু’টো রুটি আর একটু তরকারি দেওয়া হচ্ছে। তার পর বেলা ৩টের সময় দুুপুরের খাবার দিয়ে সেই খাবারই রাতে খেতে বলা হচ্ছে।’’ সঞ্জয় আদালতকে বলেন, ‘‘অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও শান্তিপ্রসাদকে যথাযথ চিকিৎসা সংক্রান্ত সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না।’’ কিন্তু আদালত এর পরও শান্তি প্রসাদের জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয়।

প্রসঙ্গত, শান্তিপ্রসাদের বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে অযোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগপত্র দেওয়ার অভিযোগ করেছে সিবিআই। তারা বলেছে নগদের বিনিময়ে পাওয়া যেত চাকরি। চাকরি দিতেন শান্তিপ্রসাদ। তবে লেনদেনের দায়িত্বে থাকতেন দুই মিডলম্যানই।

নবম-দশমের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে শান্তিপ্রসাদকে গত ১০ অগস্ট গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। পরে ৯ সেপ্টেম্বর আবার তাঁকে সিবিআই হেফাজতে নেয়। তার পর থেকে নিজাম প্যালেসেই ছিলেন শান্তিপ্রসাদ। গত ২২ সেপ্টেম্বর তাঁকে জেল হেফাজতে পাঠায় আদালত।

উল্লেখ্য, এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতিতে ভুয়ো নিয়োগপত্র দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে শান্তিপ্রসাদের বিরুদ্ধে। গ্রুপ সি মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করে সিবিআই। নিয়োগ সংক্রান্ত যে উপদেষ্টা কমিটি তৈরি করেছিলেন তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, তার চেয়ারম্যান পদে বসানো হয়েছিল শান্তিপ্রসাদকে। অভিযোগ, তাঁর আমলেই মূলত নিয়োগ দুর্নীতি হয়। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে সিবিআই যে এফআইআর দায়ের করেছিল তাতেও প্রথম শান্তিপ্রসাদের নাম ছিল বলে সূত্রের খবর। শিক্ষক, অশিক্ষক কর্মী এবং সহকারী শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির মামলাতেও বারবার তাঁর নাম উঠে এসেছে। এমনকি, তাঁর রিজেন্ট পার্কের বাড়িতে বেশ কয়েক বার তল্লাশিও চালিয়েছে ইডি এবং সিবিআইয়ের আলাদা আলাদা দল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.