বিলুপ্ত

পিটিয়ে পিঠের ছাল তুলে নিলেও অভিভাবকরা যাঁদের বলতেন বেশ করেছেন,
পাশফেলের সাথে সাথে সেই মাস্টাররাও কেমন উধাও হয়ে গেলেন।
যাঁদের ভয়াল চাউনি একক্লাস কোলাহলকে স্তব্ধ করে দিতো,
পড়া না পারলে নিল ডাউন বা বেঞ্চে দাঁড় করাতেন যাঁরা নিয়মিত,
যাঁরা ধুতি পাঞ্জাবী পরে স্বচ্ছন্দে পড়াতে পারতেন ওয়ার্ডওয়ার্থ টেনিসন, শেলী, হেমিংওয়ে,
যাঁদের শাসনের মধ্যে স্নেহ থাকতো, যাঁরা চাইতেন গাধাগুলো ঘোড়া হোক বড় হয়ে,
সেই সব মাস্টারমশাই আর দিদিমণিরা ক্রমেই বিলুপ্ত হলেন ডায়নোসরের মতো।
যদিও এই পাশফেলহীন মারধোর ব্যতিরেকে সন্তান মানুষ করার যুগে,
তাদের না থাকাটাই বোধহয় যুক্তিসঙ্গত।

শুধু কি ধমকই সব, আদরও কি পাইনি ? অনাবিল কিছু পিঠচাপড়ানি কঠিন অংক সমাধানে,
দশে আট দিয়ে সেই হেসে বলা এর থেকে বেশি আর দিই নি জীবনে,
তিনদিন না এলে কোনো বন্ধুকে দিয়ে ছিলো খোঁজ করা নিয়মমাফিক,
সেন্ট আপ হয়ে গেলে জড়িয়ে ধরাও ছিলো, বয়স্ক দুই চোখ জল চিক চিক।
গুগলের মতো হয়ে যাবতীয় নোটস আর তথ্যের ভাণ্ডার কাঁচিয়েকুঁচিয়ে যাঁরা আনতেন তুলে,
ভালো নম্বরের আগে ভালো মানুষ হও ,সে আজব কথা যাঁরা শেখাতেন স্কুলে,
কোথায় পাঠালে তাঁদের নির্বাসনে, ওহে ‘নম্বরই সব ‘বলা ব্রেকিংনিউজে বাঁচা সুশীল সমাজ?
এই খুনে নীল তিমি যুগে প্রজন্ম বাঁচাতে হলে, তাঁদের যে ছিলো বড় প্রয়োজন আজ।

আর্যতীর্থ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.