ইন্দোনেশিয়ায় ফুটবল ম্যাচ ঘিরে মর্মান্তিক ঘটনা। দু’দলের সমর্থকদের মধ্যে সঙ্ঘর্ষে ১২৭ জনেরও বেশি নিহত হয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। ইন্দোনেশিয়ার ফুটবল লিগে শনিবার জাভার দুই ক্লাব আরেমা এবং পার্সিবায়া সুরাবায়ার মধ্যে খেলা ছিল। পূর্ব জাভার মালাং রিজেন্সিতে এই ম্যাচে আরেমা ২-৩ ব্যবধানে হেরে যায়। এর পরেই দু’দলের সমর্থকরা কার্যত দাঙ্গায় জড়িয়ে পড়েন।
এই ঘটনা ১৯৮০ সালের ১৬ অগস্ট কলকাতার ইডেনের ঘটনার স্মৃতি মনে পড়িয়ে দিতে বাধ্য। ৪২ বছর আগে ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগানের ফুটবল ম্যাচে দু’দলের সমর্থকদের মধ্যে সঙ্ঘর্ষে সে দিন ১৬ জন মারা গিয়েছিলেন।
মালাং রিজেন্সি হেলথ অফিসের প্রধান উইয়ান্তো উইজো জানিয়েছেন, নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। কারণ, বহু মানুষ গুরুতর আহত অবস্থায় বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস জানিয়েছে, নিহতের সংখ্যা ১২৭। এঁদের মধ্যে দু’জন পুলিশ আধিকারিক রয়েছেন।
উইয়ান্তো বলেছেন, ‘‘যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের অধিকাংশই পদপিষ্ট হয়ে এবং শ্বাসরুদ্ধ হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। এই সংখ্যা বাড়তে পারে।’’
আরেমা হেরে যাওয়ার পরেই তাদের সমর্থকেরা হুড়মুড়িয়ে মাঠে ঢুকে পড়েন। তখনই ঝামেলা শুরু হয়। পার্সিবায়ার ফুটবলাররা বিপদ বুঝে একটুও সময় নষ্ট না করে সঙ্গে সঙ্গে মাঠ ছেড়ে সাজঘরে চলে যান। কিন্তু আরেমার বেশ কয়েক জন ফুটবলার মাঠ ছাড়তে পারেননি। তাঁদের উপরেও হামলা হয়। সমস্যা বাড়ে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে শুরু করলে। কানজুরুহান স্টেডিয়ামের ভিড়ে ঠাসা গ্যালারিতে তখনই আতঙ্ক ছড়ায়। স্টেডিয়াম থেকে বেরোনোর জন্য হুড়োহুড়ি লেগে যায়। তাতেই পদপিষ্ট হয়ে এবং শ্বাসরুদ্ধ হয়ে বহু মানুষের মৃত্যু হয়।
এক সপ্তাহের জন্য ইন্দোনেশিয়ার ফুটবল লিগ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পিটি লিগা ইন্দোনেশিয়া বারুর সভাপতি ও ডিরেক্টর আখমাদ হাদিয়ান লুকিতা বলেছেন, ‘‘এই ঘটনায় আমরা মর্মাহত, উদ্বিগ্ন। নিহতের পরিবারের প্রতি আমাদের সমবেদনা। আশা করব, এই ঘটনা থেকে আমরা সবাই শিক্ষা নেব।’’
ইন্দোনেশিয়ার ফুটবল নিয়ামক সংস্থা পিএসএসআই এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।