স্কুলে বিনামূল্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিল বিহারের স্কুল ছাত্রী রিয়া কুমারী। এই অনুরোধ শুনে এক আমলা তাঁকে বলেছিলেন, ‘‘এর পর তো তুমি কন্ডোম চাইবে।’’ ছাত্রীর উদ্দেশে আমলার এই মন্তব্যে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। এই বিতর্ক নিয়ে মুখ খুলল সেই ছাত্রী রিয়া।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে রিয়া বলেছে, ‘‘আমার প্রশ্নটা (স্যানিটারি ন্যাপকিন নিয়ে) ভুল ছিল না। এটা কোনও বড় ব্যাপার নয়। আমি কিনতে পারি। কিন্তু বস্তিতে অনেকেই থাকেন, যাঁদের এ সব কেনারও সামর্থ্য নেই। তাই নিজের জন্য নয়, সব মেয়ের জন্য চেয়েছিলাম।’’
রিয়ার অনুরোধ শুনে আমলা যে মন্তব্য করেছেন, তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে সমালোচনা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে ওই ছাত্রী বলে, ‘‘আমরা নিজেদের সমস্যার কথা জানাতে গিয়েছিলাম। লড়তে যাইনি।’’
ঠিক কী ঘটেছিল? সম্প্রতি বিহারে ইউনিসেফের সহযোগিতায় একটি কর্মশালার আয়োজন করা হয়। সেখানে ওই ছাত্রী অনুরোধ করেন যে, সরকার তাদের বিনামূল্যে সাইকেল, স্কুলের পোশাক দিচ্ছে। এর পাশাপাশি বিনামূল্যে স্যানিটারি ন্যাপকিনও যেন দেওয়া হয়। ছাত্রীর এ হেন আর্জি শুনে হরজ্যোত কউর ভামরা নামে এক আমলা পাল্টা ছাত্রীকে বলেন, ‘‘বিনামূল্যে জিনিস পাওয়ার কোনও সীমা নেই। সরকার অনেক কিছু দিচ্ছে। আজ তুমি বিনামূল্যে ন্যাপকিন চাইছ। কাল হয়তো জিনস, জুতো চাইবে। তার পর যখন পরিবারের পরিকল্পনা করবে, তখন বিনামূল্যে কন্ডোমও চাইবে।’’
আমলার এই মন্তব্যে ক্ষুব্ধ হয় স্কুলছাত্রীরা। তাদের অভিযোগ, সরকার তাদের জন্য কিছু করছে না। ভোটের সময় তাদের কাছে আসে। এ কথা শুনে ওই আমলা বলেন, ‘‘তা হলে ভোট দিয়ো না। পাকিস্তানের মতো হও।’’
ছাত্রীদের সঙ্গে আমলার এ হেন কথোপকথন ঘিরে সমালোচনায় সরব হয় বিভিন্ন মহল। ওই আমলাকে নোটিস পাঠিয়েছে জাতীয় মহিলা কমিশন। ঘটনায় অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। এই বিতর্কে দুঃখপ্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন ওই আমলা।