একই দিনে জিতল ভারত, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ভারতীয় উপমহাদেশের জয় জয়কার রবিবার। তিন দেশ জয় পেল যথাক্রমে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহির বিরুদ্ধে। ক্রিকেটের ইতিহাস কি এমন ক্ষণ অতীতে দেখেছে কখনও!
হায়দরাবাদ, করাচি এবং দুবাই। রবিবার তিন শহরে প্রায় একই সময় শুরু হয়েছিল তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। ম্যাচগুলি ঘিরে ক্রিকেটপ্রেমীদের উত্তেজনা ছিল তুঙ্গে। পরস্পরের বিরুদ্ধে খেলা ছিল না ঠিকই। তবু যেন কোথাও একটা অদৃশ্য সম্মানের টানাপোড়েন ছিল। তিন পড়শি দেশের কে জিতবে, কে হারবে— তা নিয়ে তুঙ্গে ছিল আগ্রহের পারদ। তিনটি ম্যাচেই ছিল টান টান উত্তেজনা। ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে শেষ ওভার পর্যন্ত। নিজের নিজের প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে জয় ছিনিয়ে নিতেও সক্ষম হয়েছে তিন প্রতিবেশী দেশ। ভারত ৬ উইকেটে শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজ় জিতল ২-১ ব্যবধান। পাকিস্তান ৩ রানে ক্রিকেটের জনক ইংল্যান্ডকে হারিয়ে সাত ম্যাচের সিরিজ়ে সমতা ফেরাল (২-২)। বাংলাদেশও আমিরশাহির বিরুদ্ধে দু’ম্যাচের সিরিজ়ো এগিয়ে গেল ১-০ ব্যবধানে।
এর থেকেও আকর্ষণীয় হল, একই দিনে সম্ভবত প্রথম বার ক্রিকেট মাঠে জয় পেল ভারত, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ। ভারতীয় উপমহাদেশে ক্রিকেট অনেকটা ধর্মের মতো। তিন দেশের মানুষ নাওয়া খাওয়া ভুলে ক্রিকেট দেখেন। ক্রিকেটের জন্য মাইলের পর মাইল রাস্তা হাঁটতে রাজি থাকেন। ক্রিকেট ম্যাচের টিকিটের জন্য মারামারি, হাহাকার করেন। প্রিয় দল বা ক্রিকেটারের জন্য প্রার্থনা, দোয়া করেন। তিন দেশেই অলিতে গলিতে ক্রিকেট খেলে পাঁচ থেকে পঞ্চাশ। ক্রিকেট যেমন সব দুঃখ ভুলিয়ে দেয়, তেমন সব আনন্দও কেড়ে নেয়। ক্রিকেট বিশ্বের প্রাণ ভোমরা তো ভারতীয় উপমহাদেশই। শ্রীলঙ্কাও রয়েছে এই বন্ধনীতে। দেশের রাজনৈতিক এবং আর্থিক সঙ্কট বা সমস্যার মধ্যেও এশিয়া কাপ জিতে দাসুন শনাকারা শ্রীলঙ্কার মানুষকে তৃপ্ত করেছেন। আনন্দ দিয়েছেন।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে এই সাফল্য উপমহাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের প্রত্যাশা বাড়াবে। তিন দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা নিজেদের দলকে নিয়ে ভাল ফলের আশা করবেন। ক্রিকেট দুনিয়াও এই উত্তেজনার দিকেই তাকিয়ে থাকে। একটা অ্যাশেজ বাদ দিলে আধুনিক ক্রিকেটের সব উত্তেজনা তো ভারতীয় উপমহাদেশেই।