গোটা রাজ্য, তথা দেশ বিদেশে যেখানে বাঙালি ছড়িয়ে সেখানে ইতিমধ্যেই পুজোর ছোঁয়া লেগে গিয়েছে। সবাই এখন সেই চারদিনের অপেক্ষায়। কিন্তু এই হিমালয় কন্যার পুজো হিমালয়ের পাদদেশে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। কোথায় জানেন? আমাদের কালিম্পং জেলায়। কালিম্পংয়ের গরুবাথান ব্লকে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৬২০০ ফুট উঁচুতে এই প্রথমবার দুর্গাপুজো হবে।
যাঁরা পাহাড় কিংবা জঙ্গল, অথবা দুই ভালোবাসেন তাঁদের কাছে ঝান্ডি এবং সুন্তালে এই দুটো নাম ভীষণই পরিচিত। সেখানে সারাদিন ‘ গাভীর মতো ‘ মেঘ চড়ে বেড়ায়। দেখা যায় মেঘ আর রোদের খেলা। দিনে-দিনে পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ছে এই দিকে। ফলে কয়েকটি হোমস্টে গড়ে উঠেছে। আছে খানচল্লিশেক বাড়ি। এবার সেখানে পালন করা হবে দুর্গাপুজো। ফলে পর্যটক থেকে স্থানীয় বাসিন্দা, খুশি সকলেই!
এই অঞ্চলে যাঁরা বাস করেন, ভীষণ সাধারণ মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষ, যাঁদের দিন চলে এলাচ, ঝাড়ুর চাষ করে এবং সঙ্গে পশুপালন। এঁদের পক্ষে কখনই দুর্গাপুজোর আয়োজন করা সম্ভব ছিল না। তবে এই অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখিয়েছেন এক ব্যবসায়ী।
শুভম পোদ্দার হলেন একজন পর্যটন ব্যবসায়ী, যাঁর এই এলাকায় একটি হোমস্টে আছে। তিনি উদ্যোগ নিয়েছেন এক পুজোর। একটি ক্লাব গড়ে ফেলেছেন তিনি স্থানীয়দের নিয়ে। নাম দিয়েছেন ঝান্ডি সুন্তালে ইউনাইটেড ক্লাব। আর এই পুজোর নাম? স্বর্গের পুজো।
নাম একদম যথাযথ হয়েছে। চারদিকে সবুজের সমারোহ, পাহাড়, ঝর্না, নদী, কী নেই? মাঝে বেজে উঠবে ঢাক, ঢোল, ছড়িয়ে পড়বে ধূপ, ধুনোর গন্ধ। আর মাঝে বিরাজ করবেন সপরিবারে দেবী।
এই পুজোর বিষয়ে শুভম পোদ্দার জানান যে তাঁর বরাবরের ইচ্ছে ছিল যে তিনি পাহাড়ে থাকবেন। আর সেটা সফল করতেই তিনি এই হোমস্টে গড়ে তোলেন। বহু পর্যটক আসেন এখানে। এমনকি পুজোতেও তাঁদের ভিড় নজরে আসে। কিন্তু পুজোর সময় ঘুরতে গিয়ে পুজোর আনন্দ মিস হয়ে যায়। তাই গত এক বছর ধরে তিনি এই পুজোর উদ্যোগ নিয়ে অবশেষে এই বছর তার আয়োজন করছেন। স্থানীয়রা তাঁর সাহায্য করছে।
মালবাজার থেকে এই পুজোর জন্য প্রতিমা আনা হবে। সুবল পালের তৈরি মূর্তি আসবে এখানে। ময়নাগুড়ি থেকে আসবেন পুরোহিত। ঢাকিরা যাবেন কলকাতা থেকে। হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও। ফলে এবার যাঁদের ডুয়ার্স যাওয়ার প্ল্যান আছে তাঁদের কিন্তু আর পুজো মিস হবে না। কারণ গেলেই স্বর্গের পুজোর দেখা মিলবে।