মেহবুবা মুফতির বিতর্কিত মন্তব্যের পর এ বার উপত্যকার সব স্কুলেই ভজন গাওয়ার প্রথা নিষিদ্ধ করার দাবি উঠল। স্কুলে মুসলিম পড়ুয়াদের দিয়ে ‘জোর করে’ ভজন গাওয়ানো এবং সূর্য নমস্কার করিয়ে মুসলিমদের ভাবাবেগে আঘাত করা হচ্ছে। এই দাবি তুলে সরকারের কাছে স্কুলে স্কুলে ‘হিন্দু প্রথা’ বন্ধ করার আর্জি জানাল উপত্যকার ইসলামিক সংগঠন মুত্তাহিদা মজলিস-ই-উলেমা (এমএমইউ)।
সম্প্রতি জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা দাবি করেছেন, উপত্যকায় হিন্দুত্ব প্রচারের যে লক্ষ্য নিয়েছে বিজেপি, তারই অঙ্গ হিসাবে বিভিন্ন স্কুলে মুসলিম পড়ুয়াদের দিয়ে ভজন গাওয়ানো হচ্ছে। গত ১৯ সেপ্টেম্বর একটি ভিডিয়ো টুইট করেন মেহবুবা। সেই ভিডিয়োয় উপত্যকার একটি সরকারি স্কুলের বাচ্চাদের ‘রঘুপতি রাঘব রাজা রাম’ গাইতে দেখা যায়। সেই টুইটের বিবরণীতে পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (পিডিপি)-র প্রধান লেখেন, ‘ধর্মীয় পণ্ডিতদের জেলে পোড়া, জামা মসজিদ বন্ধ করে দেওয়া এবং এখানকার স্কুলের বাচ্চাদের হিন্দু স্তোত্র গাইতে বলার মধ্যেই কাশ্মীরে ভারত সরকারের প্রকৃত হিন্দুত্ব অ্যাজেন্ডা প্রকাশ পাচ্ছে। এই আদেশ প্রত্যাখ্যান করা মানে বেআইনি কার্যকলাপের অভিযোগে পদক্ষেপ করা হবে।’
কেন স্কুলের প্রার্থনা সঙ্গীতে ‘লব পে আতি হে দুয়া’-র পরিবর্তে ‘ভজন’ গাওয়ানো হচ্ছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মেহবুবা। তিনি বলেন, ‘‘কেন ‘লব পে আতি হে দুয়া’ বন্ধ করে দেওয়া হল? এটা তো কোনও ধর্মীয় গান নয়। তা সত্ত্বেও ওই গানের পরিবর্তে ভজন গাওয়ানো হচ্ছে। ওরা কী চাইছে?’’
যদিও মেহবুবার দাবিতে গুরুত্বই দিতে চাননি উপত্যকার আর এক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আব্দুল্লা। তিনি বলেন, ‘‘আমরা দ্বিজাতি তত্ত্বে বিশ্বাস করি না। ভারত সাম্প্রদায়িক নয়। ভারত ধর্মনিরপেক্ষ। আমি নিজেই ভজন গেয়ে থাকি। কী সমস্যা তাতে? অজমেঢ় দারগায় কোনও হিন্দু গেলে কি তিনি মুসলিম হয়ে যাবেন?’’ মেহবুবাকে আক্রমণ করেছেন উপত্যকার বিজেপি নেতা রবীন্দ্র রায়নাও। তিনি বলেন, ‘‘এই ধরনের রাজনীতি করা উচিত নয় মেহবুবা মুফতির। উপত্যকায় জমি হারিয়েছেন উনি। মানুষ ওঁকে বর্জন করেছেন। এখনও এই ধরনের চক্রান্তের তত্ত্ব আউড়ে জমি তৈরি করার চেষ্টা করছেন।’’