কার্তিকের উপর চটে গিয়ে রোহিত কি ঠিক করেছিলেন? ঘুরিয়ে জবাব দিলেন ধোনি

ক্রিকেট খেলার সময় কখনওই তাঁকে মাথা গরম করতে দেখা যায়নি। কোনও সতীর্থ ক্যাচ ফস্কালে বা ফিল্ডিংয়ে ভুল করলে তিনি রাগারাগি করেননি। শান্ত মাথায় সেই সতীর্থকে বুঝিয়েছেন। তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন। কী ভাবে তিনি মাঠের মধ্যে মাথা ঠান্ডা রাখতে পারেন, তা শুধু সতীর্থ ক্রিকেটারদেরই নয়, গোটা দেশের প্রশ্ন। এক অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে সেই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি।

ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক বলেছেন, “মাঠে থাকার সময় আমরা কেউই ভুল করতে চাই না। সেটা খারাপ ফিল্ডিং হোক, ক্যাচ মিস হোক বা অন্য কিছু। কেউ সেটা করে ফেললে আমি সব সময় ওদের জায়গায় নিজেকে ভাবি। কেন কেউ ক্যাচ ফস্কাল বা খারাপ ফিল্ডিং করল, সেটা জানার চেষ্টা করি। রাগ করলে কোনও সমস্যার সমাধান হয় না। স্টেডিয়ামে ৪০ হাজার দর্শক আমাদের খেলা দেখছে। আরও কোটি কোটি লোক টিভিতে বা মোবাইলে খেলা দেখছে। সেখানে আমাদের আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখতেই হয়।”

ধোনি আরও বলেছেন, “যদি দেখি কোনও সতীর্থ মাঠে নিজের ১০০ শতাংশ দেওয়ার পরেও ক্যাচ ফস্কাল, তা হলে আমার কোনও সমস্যা নেই। তখন দেখতে চাই, অনুশীলনে ও কতগুলো ক্যাচ নিয়েছে। বোঝার চেষ্টা করি ও সেখানেও নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করছে কি না বা ওর মধ্যে সেই পরিশ্রমের ব্যাপারটা রয়েছে কি না। কেউ ক্যাচ ফেলে দিলে আগে এই ব্যাপারগুলো নিয়ে ভাবার চেষ্টা করি। সেই ক্যাচ ফস্কানোর কারণে কোনও ম্যাচে আমরা হেরেও যেতে পারি। তখন সেই সতীর্থের জায়গায় নিজেকে রেখে ভাবার চেষ্টা করি।”

ধোনির এই বক্তব্য আরও গুরুত্ব হয়ে উঠেছে সাম্প্রতিক কিছু ঘটনায়। এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ক্যাচ ফস্কে গোটা দেশের চক্ষুশূল হয়েছিলেন আরশদীপ সিংহ। এর পর অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে উইকেটকিপার দীনেশ কার্তিক একটি ডিআরএস নিতে দোনোমোনো করায় তাঁর উপর প্রকাশ্যেই চোটপাট করেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা।

ধোনির বক্তব্যে সেই ঘটনার উল্লেখ না থাকলেও তিনি বলেছেন, “আমি নিজেও মানুষ। আপনাদের মনে যা চলে, তা আমার ভিতরেও চলে। নিজেদের মধ্যে ম্যাচ খেললেও কেউ ক্যাচ ফস্কালে আমাদের খারাপ লাগে। দেশের হয়ে নামলে তো কষ্ট আরও বেশি। তা সত্ত্বেও আমরা চেষ্টা করি আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখার। বাইরে থেকে বসে অনেকেই উপদেশ দিতে পারেন যে, আমাদের কেমন খেলা উচিত ছিল। কিন্তু মাঠে নেমে কাজটা সহজ নয়। আমরা যেমন দেশের হয়ে খেলি, তেমনই বিপক্ষ ক্রিকেটাররাও দেশের হয়ে খেলে। উত্থান-পতন থাকবেই। তার বহিঃপ্রকাশ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.