ইউক্রেনে নৃশংস অত্যাচার চালাচ্ছে রুশ ফৌজ। বুধবার রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় এই অভিযোগ করলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। রুশ দখলমুক্ত এলাকায় একের পর এক গণকবরে মেলা দেহে অত্যাচারের চিহ্ন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ফৌজের ‘নির্লজ্জ আচরণের’ প্রমাণ বলে জানিয়ে বাইডেন বলেন, ‘‘রুশ বাহিনী ইউক্রেনের স্কুল, রেল স্টেশন এবং হাসপাতাল আক্রমণ করছে। মস্কোর অন্যতম লক্ষ্য হল, একটি রাষ্ট্র হিসাবে ইউক্রেনের পৃথক অস্তিত্বের অধিকারকে নির্মূল করে দেওয়া।’’
রাশিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপুঞ্জের সনদের মূল নীতি লঙ্ঘনেরও অভিযোগ তুলেছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। তাঁর অভিযোগ, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে পুতিনের বাহিনী ইউক্রেনের জনতাকে নিশানা করছে। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ইউক্রেন সেনা রুশ বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত করা খারকিভ প্রদেশের ইজিয়ুম শহর এবং আশাপাশের এলাকার গণকবর থেকে বহু দেহ উদ্ধার করেছে। আর মধ্যে অধিকাংশ দেহেই অত্যাচারের চিহ্ন রয়েছে।
গত এপ্রিলে রুশ সেনাকে হারিয়ে বুচা শহর পুনর্দখলের পরে সেখান থেকে একাধিক গণকবর উদ্ধার করেছিল ইউক্রেন ফৌজ। নিহতদের অনেকেরই হাত ছিল বাঁধা। দেহে অত্যাচারের চিহ্ন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদেমির জেলেনস্কি সে সময় মস্কোর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তুলেছিলেন। এর পর রাজধানী কিভ থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরের ছোট্ট শহর বোরোডিয়াঙ্কা এবং উত্তর-পূর্বের চেরনিহিভেও মেলে একই ধরনের গণকবর। তা ছাড়া, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি পুতিন ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান ঘোষণার পর থেকেই ধারাবাহিক ভাবে ইউক্রেনের অসামরিক অঞ্চলগুলি রুশ বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হানার লক্ষ্য হচ্ছে বলে অভিযোগ।
পুতিন বুধবার ইউক্রেন সীমান্তে অশান্তির কারণে বড় ধরনের সেনা সন্নিবেশের ঘোষণা করেছেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পর্বে জোসেফ স্তালিনের পর এই প্রথম কোনও রুশ প্রেসিডেন্ট আনুষ্ঠানিক ভাবে সেনা সমাবেশের ঘোষণা করলেন। পাশাপাশি, আমেরিকা-সহ পশ্চিমী দেশগুলি দীর্ঘ দিন ধরে রাশিয়ার বিরুদ্ধে চক্রান্ত চালাচ্ছে অভিযোগ তুলে পুতিন বলেছেন, ‘‘আঞ্চলিক অখণ্ডতার উপর কোনও আঘাত এলে রাশিয়া চুপ করে থাকবে না। প্রয়োজনে সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিরোধ হবে।’’ তাঁর এই বক্তব্যকে পরমাণু যুদ্ধের হুঁশিয়ারি বলে মনে করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপুঞ্জে বাইডেনের বক্তৃতা সঙ্ঘাতকে নতুন মাত্রা দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।