হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়ে দিলেন ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং। জানিয়ে দিলেন, বুধবার তিনি মমতার বিরুদ্ধে এফআইআর করবেন।
মঙ্গলবার তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়। বেরনোর সময় অর্জুন বলেন, “ব্যারাকপুরের সিপি আমায় বন্দুকের বাট দিয়েছে মেরেছেন।” রবিবারই মনোজ বর্মার বিরুদ্ধে সরাসরি খুনের চেষ্টার অভিযোগ তুলেছিলেন অর্জুন। বলেছিলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে মেডেল নিয়ে তার প্রতিদান দিতে আমায় মেরেছে সিপি।” এ বার ওই ঘটনায় সরাসরি পুলিশমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এফআইআর করবেন বলে হুঙ্কার দিলেন অর্জুন। তাঁর কথায়, “বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার পর আমার বিরুদ্ধে ৪৭টা মামলা হয়েছে। আমি দেখতে চাই কবে সেঞ্চুরি হয়।”
একটা সময়ে দিদি যা বলতেন, তিনি তাই করতেন তিনি। তাঁর লোকবল, জনপ্রিয়তা, বামেদের শক্ত ঘাঁটিতে তড়িৎ তোপদার, রঞ্জিত কুণ্ডুদের চোখে চোখ রেখে লড়ার মানসিকতায় মুগ্ধ ছিলেন দিদি। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে তৃণমূলের বড় ভরসা ছিলেন তিনি। সেই অর্জুন সিং এখন দিদির সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ। তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব ব্যারাকপুরে গিয়ে বলেছিলেন, অর্জুনকে দু’লাখ ভোটে হারাবেন। কিন্তু লক্ষ্যভেদ করেছেন অর্জুন। জেতার পর বলেছেন, “অর্জুন সিং-এর জীবনে হার বলে কিছু নেই।” অর্জুন নিজের বাড়িতে ফিরেছেন। কয়েকদিন তাঁকে বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। কিন্তু প্রশাসনিক মহলে পুলিশের নিচু তলার কর্মীরা বলতে শুরু করেছেন, কে জানে আবার কবে কী হয়!
এর মধ্যে সোমবার রাতে হাসপাতালে গিয়ে অর্জুনের সঙ্গে দেখা করে আসেন বিধাননগরের প্রাক্তন মেয়র তথা তৃণমূল বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত। সকাল থেকে গণেশ পুজো নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। তাই পাড়া থেকে পাড়ায় হলেও বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে যাওয়া হয়নি। রাতে ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংকে দেখতে চলে যান সব্যসাচী। অনেক্ষণ গল্প করলেন তাঁর সঙ্গে। চেয়ারে বসে প্রায় আধ ঘণ্টা কথা হয় দু’জনের। তার মাঝেই একটি ফোন আসে সব্যসাচীর কাছে। সেই ফোন রিসিভ করে রাজারহাট নিউটাউনের তৃণমূল বিধায়ককে বলতে শোনা যায়, “আমার বন্ধু হাসপাতালে ভর্তি আছে তো! তাঁকে দেখতে এসেছি।”
এখনও সব্যসাচী খাতায় কলমে তৃণমূল বিধায়ক। যদিও তৃণমূলই তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে তাঁকে মেয়র পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে। কিন্তু এখনও সরকারি ভাবে তিনি তৃণমূলেই। যোগ দেননি বিজেপি-তে। যদিও তৃণমূলের অনেক নেতাই বলছেন, ওঁর আর বিজেপি হওয়ার বাকি কী আছে! সবই তো হয়ে গিয়েছে। ব্যারাকপুরের ঘটনা নিয়ে যে সব্যসাচীবাবু রেগে রয়েছেন, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন সোমবার। নবান্নের দিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, “কাশ্মীর শান্ত হয়ে গেল, কিন্তু ব্যারাকপুর শান্ত হল না। বঙ্গবাসী হিসেবে এটা আমাদের লজ্জার।”