রাতারাতি উজির থেকে ফকির! বেঙ্গালুরুর কলেজছুট তরুণের চায়ের দোকানে বিটকয়েন দিয়ে মিলছে গরম চা

স্বপ্ন ছিল, ভারতের সেরা বিটকয়েন কারবারি হওয়ার। সেই অনুযায়ী চলছিল ডিজিটাল মুদ্রার কেনাবেচা। লাভও হচ্ছিল ভালই। কিন্তু রাতারাতি বাদশা থেকে ফকির ২২ বছরের শুভম সাইনি। অগত্যা, চায়ের দোকান খুলে বসেছেন তিনি। তবে চমক রয়েছে তাতেও। শুভমের দোকানই সম্ভবত প্রথম, যেখানে বিটকয়েন দিয়েও চায়ের স্বাদ নেওয়া যায়।

কর্নাটকের রেওয়ারির ইন্দিরা গাঁধী বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া শুভমের উৎসাহ ছিল ক্রিপ্টোকারেন্সিতে। পড়তে পড়তেই তিনি বিটকয়েন কেনাবেচা শুরু করেন। প্রথমে নিজের সমস্ত জমানো টাকার পাশাপাশি মা-বাবার কাছ থেকেও কিছু টাকা নিয়ে মোট দেড় লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেন। কয়েক মাসের মধ্যেই সেই বিনিয়োগ গিয়ে দাঁড়ায় ৩০ লক্ষ টাকায়। তখন শুভমকে আর পায় কে! পড়া ছেড়ে সর্বক্ষণের জন্য ঝাঁপ দেন ডিজিটাল মুদ্রার দুনিয়ায়। মা-বাবার কাছ থেকে নেওয়া টাকা ফিরিয়ে দেন। নিজের জীবনযাপনে আসে আমূল পরিবর্তন। জীবনে লাগে বৈভবের ছোঁয়া। কিন্তু কিছু দিনের মধ্যেই ক্রিপ্টোয় লাগে ভাটার টান। এক রাতের মধ্যে শুভমের ৩০ লক্ষ টাকা গিয়ে ঠেকে ১ লক্ষে। ২০২০-এর সেই সময়ের কথা ভেবে রাকেশ বলেন, ‘‘ভেবেছিলাম, আমি মনে হয় ভারতের দ্বিতীয় রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালা হয়ে উঠতে পারব। কিন্তু কোথায় কী! যেখান থেকে শুরু করেছিলাম, সেখানেই ফেরত এলাম। ভাবতেও পারিনি একটা রাতে জীবন এ ভাবে বদলে যাবে। আমাকে আকাশ থেকে টেনে মাটিতে নামাবে।’’

সব হারিয়ে শুভম ঠিক করেন ফুটপাথে চায়ের দোকান দেবেন। সেই মতো শুরু হয় ‘দ্য ফ্রাস্ট্রেটেড ড্রপআউট’ নামে চায়ের দোকানের যাত্রা। তবে আর পাঁচটা চায়ের দোকানের সঙ্গে শুভমের দোকানের মূল পার্থক্য, এই দোকানে আপনি চায়ের দাম মেটাতে পারবেন বিটকয়েনেও। এই সুবাদেই শুভমের দোকানের নাম ছড়িয়ে পড়ে বেঙ্গালুরু জুড়ে। ক্রিপ্টো ভক্তরাও একে একে ভিড় জমাতে শুরু করেন দোকানে। ইদানীং, সেই দোকান আর কেবল চায়ের দোকান নেই, তা হয়ে উঠেছে বেঙ্গালুরুর তাবড় ক্রিপ্টো কারবারির মিলনস্থল। চায়ের দাম ক্রিপ্টোতে মেটানো তো আছেই, তার পাশাপাশি শুভম নিজের অভিজ্ঞতা দিয়েও খদ্দেরদের নানা উপদেশ দেন। অনেকে মিলেই চলে বাজার নিয়ে আলোচনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.