গণধর্ষণের শিকার কিশোরী, জড়িত দুই নাবালক, অভিযুক্তদের বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিল প্রশাসন

মন্দিরে পুজো দিতে আসা বছর ১৬-র এক কিশোরীকে তুলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করা হল মধ্যপ্রদেশে। তার পর মারধর করে ফেলে রেখে যাওয়া হল রাস্তায়। ঘটনায় গুরুতর জখম ওই মেয়েটির অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছে। অন্য দিকে, ধর্ষণে অভিযুক্ত তিন জনের বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে মধ্যপ্রদেশ প্রশাসন!

মধ্যপ্রদেশের রেওয়া জেলার নয়গাড়ি থানা এলাকায় ঘটনাটি ঘটে শনিবার দুপুরে। পুলিশ জানিয়েছে, ধর্ষণকারীরা সংখ্যায় ছিল ছ’জন। তাদের মধ্যে দু’জন নাবালক। অভিযুক্তদের তিন জনকে রবিবারই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাকি তিন জনেরও খোঁজ চলছে। তবে আপাতত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে ধৃতদের তিন জনের বাড়িতে বুলডোজার চালিয়েছে জেলা প্রশাসন। তারা জানিয়েছে, বাড়ি গুলি বেআইনি ভাবে তৈরি করা হয়েছিল। তবে একইসঙ্গে রেওয়া প্রশাসন জানিয়েছে, বাকি তিন জন গ্রেফতার হলে, তাদের বিরুদ্ধেও একই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ছ’জনের বিরুদ্ধেই গণধর্ষণ, ডাকাতি, নাবালিকাকে যৌন নির্যাতনের ধারায় অভিযোগ দায়ের করে এফআইআর করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে অভিযোগ প্রমাণ হওয়ার আগেই প্রশাসনের তরফে ‘শাস্তি’ দেওয়া হয়েছে ধর্ষণে অভিযুক্তদের। বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে তাদের বসতবাড়ির ‘বেআইনি’ নির্মাণ। এর আগে অপরাধীদের বাড়িতে বুলডোজার চালানোর রেওয়াজ চালু হয়েছিল উত্তরপ্রদেশে। বিজেপি শাসিত রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের নির্দেশে ‘বিচারের আগেই বিচার’ রীতিমতো জনপ্রিয়ও হয়। যার দৌলতে মুখ্য়মন্ত্রীর নামই হয়ে যায় ‘বুলডোজার যোগী’। রবিবার বিজেপি শাসিত আর একটি রাজ্য মধ্যপ্রদেশে একই নীতি নিতে দেখা গেল প্রশাসনকে।

শনিবার ঘটনাটির অনতিবিলম্বেই পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন ওই কিশোরীর এক পুরুষ বন্ধু। তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, ওই দিন দুপুরে মন্দিরে পুজো দিতে গিয়েছিলেন তাঁরা দু’জনে। পুজো দেওয়ার পর তাঁরা মন্দির চত্বরেরই এক প্রান্তে বসে গল্প করছিলেন। সেই সময়ই দু’জনের উপর চড়াও হয় ওই ছ’জন। কিশোরীকে তাঁর বন্ধুর সামনেই মন্দির চত্বর থেকে টেনে নিয়ে যাওয়া হয় নির্জন এলাকায়।

পুলিশকে অভিযোগকারী জানিয়েছেন, দু’জনেই ওই ধর্ষণকারীদের কাছে তাঁদের ছেড়ে দেওয়ার জন্য কাতর আবেদন জানান। কিন্তু তাঁদের কোনও কথাই কানে তোলেনি দুষ্কৃতীরা। ওই কিশোরীর উপর নিরবিচ্ছিন্ন অত্যাচার চালানোর পর তাঁকে রাস্তাতেই ফেলে রেখে পালিয়ে যায় ধর্ষণকারীরা। যাওয়ার আগে দু’জনকেই প্রাণের হুমকিও দিয়ে যায়। পুলিশ খবর পেয়ে ওই আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই কিশোরীকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তিনি আপাতত চিকিৎসাধীন।

পুলিশ জানিয়েছে, তিন অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চলছে। খুব শীঘ্রই বাকি তিন অভিযুক্তকেও গ্রেফতার করা যাবে বলে আশা করছে তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.