এক সঙ্গে দু’দুটি চাকরির ‘অফার’ হাতে পেয়ে আহ্লাদে আটখানা হয়েছিলেন বিপ্লব। হরিয়ানা ও কর্ণাটকের ওই দু’টি সংস্থার নম্বরে ডায়াল করেছেন একাধিকবার। কিন্তু কোনওবার লাইন পাননি। চারিদিকে শুনছেন, ভুয়ো নিয়োগপত্র পেয়েছেন অনেকে। কারও কারও চাকরির ‘অফার লেটারের’ (নিয়োগপত্র) নামে এসেছে প্রশিক্ষণের ‘অফার’। বিপ্লব ধরে নিয়েছেন, তাঁর ক্ষেত্রেও এমন কিছুই ঘটে থাকবে। সব মিলিয়ে হতাশ দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাটের বাসিন্দা এই যুবক।
দপ্তরির মোড় এলাকায় থাকেন বিপ্লব। সদ্য উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছেন। উচ্চ মাধ্যমিক পড়তে পড়তেই উৎকর্ষ বাংলা প্রকল্পের অধীনে ইলেক্ট্রিশিয়ানের কোর্সে ভর্তি হন। সোমবার ডাক পেয়েছিলেন নেতাজি ইন্ডোরের অনুষ্ঠানে।
বিপ্লব জানান, ওইদিনই হরিয়ানার গুরগাঁওয়ের একটি সংস্থার চিঠি পান। সেই চিঠিতে দেখেন, মাসে ১৫ হাজার টাকা বেতনের চাকরি মিলেছে। সেখানে গিয়ে চূড়ান্ত ইন্টারভিউ দিতে হবে। যোগাযোগের যে নম্বর দেওয়া ছিল চিঠিতে, সেখানে ফোন করলেও টানা বেজে গিয়েছে। দিন দু’য়েক পরে কর্ণাটকের কোলারের একটি কোম্পানির চিঠি পান বিপ্লব। সেই চিঠিতে দ্রুত কোলারে পৌঁছতে বলা হয় তাঁকে। সেখানেও চূড়ান্ত ইন্টারভিউ পেরিয়ে কাজ মিলবে বলে জানানো হয়। এবারও একই অভিজ্ঞতা। ফোন নম্বরে যোগাযোগই করা যায়নি।
কী করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না বিপ্লব। বাইরে যেতে আপত্তি নেই নিম্নবিত্ত পরিবারের ছেলের। কিন্তু কোথায় যাবেন, কী ভাবে যাবেন— কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না। তাঁর কথায়, “চাকরিটা করতে চাই। গুরগাঁওয়ের কোম্পানিতেই যাওয়ার ইচ্ছা রয়েছে। কিন্তু ওদের নম্বরে ফোন করে তো পেলাম না।’’
তবে আশা পুরোপুরি ছাড়েননি। বললেন, ‘‘আমার ফোন না পেলেও ওরা নিশ্চয়ই আমাকে ফোন করে নেবে। করলেই বেরিয়ে পড়ব।”
এ দিকে, একই প্রার্থীর কাছে দু’টি ভিন্ন রাজ্যের দু’টি সংস্থার প্রস্তাব কী ভাবে পৌঁছল, বুঝতে পারছে না স্থানীয় প্রশাসন। মগরাহাট ২ ব্লকের উৎকর্ষ বাংলার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক শাবব আলম বলেন, “একজনের কাছে দু’টো কোম্পানির চিঠি যাওয়ার কথা নয়। এটা কী ভাবে হল খতিয়ে দেখা হবে।” ওই ছাত্রের সঙ্গে কি কোম্পানির তরফে যোগাযোগ করা হবে? শাবব বলেন, “কোম্পানির তরফে তো কোনও ছাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে না। ওদেরই কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করে চিঠিতে দেওয়া ঠিকানায় চলে যেতে হবে।”