ডেঙ্গি এবং ম্যালেরিয়া পরিস্থিতি নিয়ে বেসরকারি হাসপাতালগুলির সঙ্গে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বৈঠক করলেন রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম। সূত্রের খবর, রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা মেনে রোগীদের চিকিৎসার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে বৈঠকে। পাশাপাশি, বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে খরচেও লাগাম টানতে বলা হয়েছে।
রাজ্যে ক্রমেই বাড়ছে ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ার প্রকোপ। এর মধ্যে বদলেছে ডেঙ্গির উপসর্গ। সে কারণে উদ্বেগে প্রশাসন। সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। এই পরিস্থিতিতে শনিবার বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসলেন রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ। সূত্রের খবর, বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে সচিবের স্পষ্ট নির্দেশ, ডেঙ্গি বা ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে কেউ হাসপাতালে ভর্তি হলেই স্বাস্থ্য দফতরকে জানাতে হবে। রাজ্য সরকার নতুন পোর্টাল চালু করেছে। স্বাস্থ্য দফতরের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সেই পোর্টালে ঢুকে দৈনিক আক্রান্তের পরিসংখ্যান দাখিল করতে হবে।
ডেঙ্গি বা ম্যালেরিয়ার উপসর্গ দেখা দিলেই এলাইজা, এনএস১ পরীক্ষা করিয়ে নিশ্চিত হতে হবে। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণের কোনও প্রয়োজন নেই বলেই মনে করছে স্বাস্থ্য দফতর। তবে বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে পরীক্ষার খরচ সাধ্যের মধ্যে রাখতে হবে। নয়তো হস্তক্ষেপ করবে সরকার। ডেঙ্গি বা ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে কেউ বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হলে যথেচ্ছ বিল করা যাবে না।
সূত্রের খবর, ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশিকার ওপরেই জোর দিয়েছেন স্বাস্থ্য সচিব। জানিয়েছেন, সেই নির্দেশিকা মেনেই চিকিৎসা চলবে বেসরকারি হাসপাতালে। ডেঙ্গি বা ম্যালেরিয়ার চিকিৎসার জন্য কলকাতার বেসরকারি হাসপাতাল প্রয়োজনে স্বাস্থ্যভবনের সাহায্য নিতে পারবে। জেলায় বেসরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অবস্থা খতিয়ে দেখবে সরকার। পাশাপাশি স্বাস্থ্য দফতর এ-ও মনে করছে, অক্টোবরের শেষ বা নভেম্বরের শুরু পর্যন্ত ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়ার প্রকোপ চলবে।
এই বৈঠক প্রসঙ্গে আমরির সিইও তথা পূর্বাঞ্চলীয় হাসপাতাল সংগঠনের সভাপতি রূপক বড়ুয়া বলেন, ‘‘কোভিড এখন নিয়ন্ত্রণে। ডেঙ্গি চিন্তায় রেখেছে। কী ভাবে ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়, সেই নিয়েই স্বাস্থ্য সচিবের সঙ্গে ছিল বৈঠক।’’
শুক্রবার স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত শেষ পরিসংখ্যান বলছে, আগের ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৬৬ জন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৫৮৪ জন আক্রান্ত। কলকাতা, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, মুর্শিদাবাদ এবং দার্জিলিং— এই সাত জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা তুলনামূলক ভাবে বেশি।