Kalyani University: থিসিস একশো শতাংশই নকল! অপসারিত কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন

অবাক করার মতো ঘটনা ঘটেছে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে। অধ্যাপকের থিসিস পেপার একশো শতাংশই নকল! কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের এডুকেশন ফ্যাকাল্টির ডিন দেবপ্রসাদ শিকদারের পিএইচডি’‌র গবেষণাপত্র একশো শতাংশই নকল বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকী তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির রিপোর্টে উঠে এসেছে এমনই তথ্য। নকল থিসিস পেপার জমা দিয়ে পিএইচডি ডিগ্রি পান এই অধ্যাপক বলে অভিযোগ। আবার সেটা দেখিয়ে ডিন পদে চাকরি করে চলেছেন বলেও অভিযোগ।

ঠিক কী ঘটেছে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে?‌ থিসিস নকল করে পিএইচডি ডিগ্রি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শিক্ষাতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক দেবপ্রসাদ শিকদারের বিরুদ্ধে। টানা দু’বছর ধরে তিনি কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন পদে কর্মরত। ১৯৯৯ সালের মার্চ মাসে ‘এ কম্পারেটিভ স্টাডি অফ টিচিং বায়োলজি ইন ডিফারেন্ট কোর্সেস অ্যাট হায়ার সেকেন্ডারি লেভেল ইন ওয়েস্ট বেঙ্গল’ শীর্ষক শিরোনামে একটি থিসিস কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেন দেবপ্রসাদ। ওই বছরেই তিনি পিএইচডি ডিগ্রি পান। আর অধ্যাপক হিসাবে নিজের কাজ চালিয়ে যান। এই অভিযোগ ওঠার পর ডিন পদ থেকে তাঁকে অপসারণ করা হয়। যদিও অভিযুক্ত এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

কেমন করে সামনে এল নকল থিসিস? এই‌ অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে নিয়ে আসেন অধ্যাপক শান্তিনাথ সরকার। তাঁর অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ জানিয়ে আসছিলাম। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের আগের প্রশাসন তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। এমন থিসিস জালিয়াতি করে পিএইচডি ডিগ্রি লাভের দৃষ্টান্ত খুব কম। তিনি বলেন, ‘‌লাইব্রেরিতে গিয়ে বিভিন্ন সময় দেখেছি, ড. স্বদেশরঞ্জন সামন্ত আর আমাদের বিভাগের অধ্যাপক দেবপ্রসাদ শিকদারের গবেষণাপত্র প্রায় এক। এটা কী করে হয়, তা নিয়ে মনে প্রশ্ন ছিলই। এই অভিযোগ নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত হয়েছিল। ২০২১ সালে তাই আমি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে আরটিআই করে জানতে চেয়েছিলাম, তদন্ত কমিটির রিপোর্টে কী বলা হয়েছে?‌ তারপরই বেরিয়ে এসেছে আসল সত্য।’‌

কী বলছেন অপসারিত অধ্যাপক?‌ এই বিষয়ে অধ্যাপক দেবপ্রসাদ শিকদার বলেন, ‘‌আমাকে এভাবে অপসারণ করা যায় না। অপসারণ করতে পারে উচ্চশিক্ষা দফতর। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, সেটা সঠিক নয়।’‌ আর তদন্ত কমিটি দু’টি থিসিস খতিয়ে দেখেন যে, অধ্যাপক দেবপ্রসাদ শিকদারের থিসিস এবং অধ্যাপক স্বদেশরঞ্জন সামন্তের থিসিসের প্রায় ১০০ শতাংশ মিল রয়েছে। দুটিকে থিসিসের মধ্যে পার্থক্য শুধু একটাই—দেবপ্রসাদ শিকদারের থিসিসের শিরোনামে ‘বায়োলজি’ লেখা রয়েছে। আর অধ্যাপক স্বদেশ সামন্তের শিরোনামে উল্লেখ রয়েছে ‘ ফিজিক্স’।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.