আমাদের দেশ ধীরে ধীরে সংকট থেকে মহা সংকটের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। মহাসংকটের এই চোরা স্রোত প্রবাহমান স্বাধীনতার পর থেকেই।

দেশ গঠন এবং দেশ রক্ষার দ্বায়িত্ব বয়ষ্কদের নয়। স্বাধীনতার পর, দেশের যুব সমাজকে দেশ গঠনের দ্বায়িত্বে না এনে কিছু বানপ্রস্থী নেতারা চেয়ার দখল করে তাদের বস্তা পচা ভাবনা চিন্তা দিয়ে দেশে চালিয়েছিলেন,তাই দেশের তরুনেরা এই দেশ গঠনের ভাগীদার হতে পারেনি।

“ যে প্রতিষ্ঠান বা আন্দোলনের মুলে স্বাধীন চিন্তাও নতুন প্রেরনা নাই, সেই সেই প্রতিষ্ঠান বা আন্দোলন তরুনের প্রতিষ্ঠান বা আন্দোলন বলিয়া অভিহিত হইতে পারে না”—– নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু( ১০ ই ফেব্রুয়ারী ১৯২৯ সাল, পাবনা যুব সম্মিলনীতে সভাপতির ভাষন)।

“শক্তি পুজা কথার কথা না, যদি কথার কথা হত, তবে চিরদিন ভারত শক্তি পুজে শক্তিহীন কভু হতো না”—নেতাজী।

শক্তি সাধনার ব্যাখ্যা বিবেকানন্দ করেছিলেন তা হলো “ পুজা তার সংগ্রাম অপার, সদা পরাজয়, তাহা না ডরাক তোমা, হৃদয় স্মশান, নাচুক তাহাতে শ্যামা”।

পরাজয়ের মধ্য দিয়ে নিজের বুকে আগুন জ্বালাতে পারে একমাত্র তরুন যুবা যুবতী রা। বৃদ্ধ দের কাজ তাদের উৎসাহ দেওয়া। ক্ষমতার রাশ নিজের হাতে রেখে দিয়ে তরুন দের রাস্তায় ছেড়ে দেওয়ার অর্থ তাদের পথ ভ্রষ্ট করা।

“The voice of Lord Krishna was the voice of immortal Youth” শ্রী গীতায় প্রতিটি পাতায় এই তারুন্য শক্তির প্রতিভু অর্জুনকে সেই আহবান ই করে গেছেন শ্রী কৃষ্ণ।

দেশকে রক্ষা এবং এগিয়ে নিয়ে যেতে দেশের তরুনের আদর্শ কি হবে????? “Nationalism—Cultural Nationalism”— “সাংষ্কৃতিক জাতীয়তাবাদ”। দেশের মুল সংষ্কৃতি এবং জাতিগত ঐতিহ্য কে আদর্শ করে গড়ে তুলতে হবে এক অপার এবং অপ্রতিরোধ্য সংগ্রাম। চীন, আরব থেকে সেই সংষ্কৃতি বা জাতিগত প্রেরনা আসতে পারে না। আমাদের দেশেই যুগ যুগ ধরে সেই সংষ্কৃতি এবং জাতি আছে। তাকে জানতে হবে, জানাতে হবে, নিজেদের জীবনে প্রতিফলিত করতে হবে।

বিদেশীরা আমাদের শাসন করেছে ১০০০ বছর। তারা দেশের সংষ্কৃতি , জাতি গত চিন্তা ভাবনা ধুয়ে মুছে দিয়েছে। তবু এখোনো আছে আনাচে কানাচে পড়ে। সেই সংষ্কৃতিকে বুকে আকড়ে ধরে যেতে হবে সমাজের প্রতিটি কোনে কোনে।

তরুন দের সামনে আজ বড়ো বাধা তাদের প্রকৃত শিক্ষা নেই, প্রকৃত শিক্ষক নেই। কিন্তু তারা আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত, প্রায় ৪০০ মিলিয়ন সংখ্যায়। সারা উত্তর এবং দক্ষিন আমেরিকা মিলিয়ে অতো লোক সংখ্যা নেই। তরুনদের সামনে চাকরীর সমস্যা আছে।

এই দেশ তরুনদের, বৃদ্ধদের থেকে ক্ষমতা ছিনিয়ে নিয়ে নিজেদের হাতে নিতে হবে দেশ গঠনের লাগাম। তাদের পেছন পেছন ঘুরে কোনো লাভ নেই ওরা কোনোদিন নিজের ব্যাক্তিগত বিষয় ছাড়া দেশ বা দেশের মানুষের কথা ভাববে না।
স্বদেশী আন্দোলনে ( এই আন্দোলন গান্ধী করে নাই) চারন কবি মুকুন্দরাম গেয়েছিলেন “ ছেড়ে দে রেশমী চুড়ি বংগ নারী কভু হাতে আর পরো না”।
এখন সময় এসেছে, তরুনেরা “জাতীয়তাবাদী হয়ে” দেশের কাজে এগিয়ে আসুক। নইলে এই দেশকে আর রক্ষা করা যাবে না।

ডাঃ মৃনাল কান্তি দেবনাথ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.