যদি সময়মতো সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের কৌশল প্রয়োগ করা হত, তাহলে কোভিড অতিমারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় অনেক বেশি জীবন বাঁচানো সম্ভব হত। এমনই দাবি করল সংসদীয় কমিটি। পাশাপাশি কমিটির অভিযোগ, পরিস্থিতির ভয়াবহতা অনুমানই করতে পারেনি সরকার। কমিটির পর্যবেক্ষণ, বিশ্বের সবচেয়ে বেশি কোভিড কেসে জর্জরিত দেশগুলির মধ্যে ভারত অন্যতম। দেশের বিপুল জনসংখ্যা এই অতিমারীর ক্ষেত্রে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে।
স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি গত সোমবার রাজ্যসভায় তাদের ১৩৭তম প্রতিবেদন পেশ করে। সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে যে দ্বিতীয় ঢেউয়ে নিঃসন্দেহে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা অনেক বেশি ছিল। এই ঢেউয়ে মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়, হাসপাতালে অক্সিজেন এবং শয্যার অভাব দেখা দেয়, গুরুত্বপূর্ণ ওষুধের সরবরাহ কমে যায়। তাছাড়া অত্যাবশ্যকীয় স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে ব্যাঘাত ঘটে। অপরদিকে অক্সিজেন সিলিন্ডার এবং ওষুধের কালোবাজারি বৃদ্ধি পায়। রিপোর্টে বলা হয়, কমিটি এই বিষয়ে অসন্তুষ্ট যে অনেক রাজ্যই কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় ঢেউয়ের পরিপ্রেক্ষিতে তৈরি হওয়া অনিশ্চয়তা এবং জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারেনি। এর জেরেই ৫ লাখেরও বেশি মৃত্যু ঘটেছিল।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘সরকার যদি প্রাথমিক পর্যায়ে ভাইরাসের মারাত্মক স্ট্রেন সনাক্ত করতে সফল হত এবং এর নিয়ন্ত্রণের জন্য যথাযথ কৌশল অবলম্বন করত, তাহলে এর প্রতিক্রিয়া কম গুরুতর হত এবং অনেক জীবন বাঁচানো যেত।’ রিপোর্টে আরও বলা হয়, ভঙ্গুর স্বাস্থ্য পরিকাঠামো এবং স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের বিপুল ঘাটতির জেরে প্রচণ্ড চাপের মুখে পড়েছিল ভারত। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে সরকার অতিমারীর সম্ভাব্য পুনরুত্থান এবং এর পরবর্তী ঢেউয়ের ভয়াবহতা সঠিকভাবে অনুমান করতে পারেনি। দেশে প্রথম ঢেউয়ের পরে যখন কোভিড মামলার গ্রাফ নিম্নমুখী হয়েছিল, তখনও কোভিডের পুনরুত্থানের সম্ভাবনার উপর নজরদারি করা উচিত ছিল বলে মতা প্রকাশ করা হয় কমিটির রিপোর্টে।