অবশেষে শতরান ধরা দিল বিরাট কোহলীর ব্যাটে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৭১তম শতরান পেলেন আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে। এ বারের এশিয়া কাপের প্রথম শতরানও এল কোহলীর ব্যাট থেকেই। টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এই প্রথম শতরান এল কোহলীর ব্যাট থেকে। আন্তর্জাতিক মঞ্চে তিন ধরনের ক্রিকেটেই শতরান হয়ে গেল তাঁর।
এশিয়া কাপের শুরু থেকেই ছন্দে ফেরার ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছিল কোহলীর ব্যাটে। চেনা মেজাজে পাওয়া না গেলেও রান আসছিল প্রাক্তন অধিনায়কের ব্যাটে। সেই পথেই চলে এল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কোহলীর প্রতিক্ষিত শতরান।
আগের ম্যাচেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শূন্য রানে সাজঘরে ফিরেছিলেন। আফগানিস্তান ম্যাচে সুদে আসলে পুষিয়ে নিলেন কোহলী। ১০২০ দিন পর শতরান ধরা দিল কোহলীর ব্যাটে। ২০১৯ সালের ২৩ নভেম্বর বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কলকাতায় দিন-রাতের টেস্টে শেষ শতরান করেছিলেন কোহলী। তার পর থেকে তাঁর ব্যাটে আর ধরা দেয়নি শতরান। অপেক্ষা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতম হয়েছে। ক্রিকেটপ্রেমীরা চাতক পাখির মতো চেয়ে থেকেছেন কোহলীর দিকে। কিন্তু বার বার হতাশ হতে হয়েছে তাঁদের। কোহলীর বৃহস্পতিবারের শতরান একরাশ স্বস্তি নিয়ে এল ক্রিকেট বিশ্বে। এ দিনও শুরুতে কিছুটা ধরে খেলার চেষ্টা করছিলেন কোহলী। ব্যাটে-বলে ঠিক মতো সংযোগ হতেই হাত খুলে আফগান বোলারদের শাসন করতে শুরু করলেন। শতরান এল ৫৩ বলে। বিরাট ছক্কায় এল বহু কাঙ্খিত শতরান।
শতরান পূর্ণ হতেই আকাশের দিকে তাকালেন কোহলী। মুখে তৃপ্তির হাসি। গোটা স্টেডিয়াম দাঁড়িয়ে হাততালি দিচ্ছে। হাততালি দিচ্ছেন ভারতীয় দলের সতীর্থরা। হাততালি দিচ্ছেন আফগান ক্রিকেটাররা। কোহলীর মুখে শুধুই হাসছেন। সকলের অভিবাদনের উত্তরে এক বার মাথা ঝোঁকালেন। জামার ভিতর থেকে বিয়ের আঙটি বের করে চুম্বন করলেন। কোহলীকে দেখেই মনে হচ্ছিল, যেন পাহাড় প্রমাণ চাপ থেকে মুক্ত হলেন।
এশিয়া কাপের আগে এক মাস বিশ্রাম নিয়েছিলেন। ব্যাট পর্যন্ত ছুঁয়ে দেখেননি। প্রাক্তন ক্রিকেটারদের একাংশ সমালোচনায় মুখর হয়েছিলেন। কেউ কেউ তাঁকে দল থেকেই বাদ দেওয়ার দাবি তুলতে শুরু করেছিলেন। মুখে একটা কথাও বলেননি কোহলী। কেবল ব্যাট হাতে জবাব দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। বিক্ষিপ্ত ভাবে রান এসেছে। ধরা দিয়েছে অর্ধশতরানও। কিন্তু শতরান ধরা দিচ্ছিল না কিছুতেই। সেই শতরানই ধরা দিল এশিয়া কাপে ভারতের শেষ ম্যাচে। শুধু রানই পেলেন না কোহলী। ফিরে পেলেন আত্মবিশ্বাস। পেলেন কঠোর পরিশ্রমের ফল।
শতরানের পর কোহলীর ব্যাট আরও চওড়া হয়ে উঠল। গোটা স্টেডিয়াম তখন শুধুই কোহলীময়। তাঁর ব্যাটে বল লাগলেই ছুটে যাচ্ছে বাউন্ডারিতে। বল উড়ে যাচ্ছে গ্যালারিতে। মাঠের দর্শকরা তো বটেই গোটা ক্রিকেট বিশ্বই তখন সম্মোহিত বিরাট ব্যাটে।
কয়েক দিন পরেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শতরানের স্বাদ পেয়ে যাওয়া কোহলী নিশ্চিত ভাবেই বড় ভরসা হয়ে উঠবেন রোহিত শর্মার। দুবাইয়ের মাঠে আত্মবিশ্বাসী ইনিংসে ছিল তাঁর চেনা মেজাজের ছোঁয়া। সহজ-সাবলীল ভাবে খেললেন গোটা ইনিংস। শেষ পর্যন্ত ৬১ বলে ১২২ রান করে অপরাজিত থাকলেন। তাঁর ব্যাট থেকে এল ১২টি চার এবং ৬টি ছয়। স্ট্রাইক রেট ২০০। তাঁর শতরানে ভর করেই আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ভারত তুলল ২ উইকেটে ২১২ রান।