ছেলের সামনেই মাকে যৌন হেনস্থা! বাধা পেয়ে চলন্ত ট্রেন থেকে ধাক্কা, মৃত্যু মায়ের, বগিতে একলা ছেলে…

৩০ বছরের এক মহিলা ন’বছরের ছেলেকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। রাতের ট্রেনে এক ব্যক্তি তাঁর যৌন হেনস্থার চেষ্টা করেন। মহিলা প্রাণপণে বাধা দেন। ব্যর্থ হয়ে মহিলাকেই ধাক্কা দিয়ে ট্রেন থেকে ফেলে দেন দুষ্কৃতী। মৃত্যু হয় মহিলার। ট্রেনের কামরায় একা থেকে যায় ন’বছরের ছেলে।

স্বামী থাকেন চণ্ডীগড়ের তোহানায়। বাচ্চাকে নিয়ে রাতের ট্রেনে স্ত্রী রোহতক থেকে ফিরছিলেন। ট্রেনের কামরায় ওই মহিলা ও তাঁর সন্তান ছাড়া কেউই ছিল না। হঠাৎই এক ব্যক্তি ছেলের সামনেই মহিলার যৌন নিগ্রহের চেষ্টা করেন। মহিলা বাধা দেন। ধস্তাধস্তি চলার পর মহিলাকে চলন্ত ট্রেন থেকে ছুড়ে ফেলে দেন ওই ব্যক্তি। তার পর নিজেও লাফ দেন। কামরায় একা থেকে যায় ন’বছরের সন্তান।

মহিলার স্বামী বলেন, ‘‘আমার ছেলে কামরায় বসে কাঁদছিল। আমাকে দেখেই সে ছুটে আসে। বলে, মাকে এক জন ধাক্কা দিয়ে ট্রেন থেকে ফেলে দিয়েছে। ট্রেন তোহানা স্টেশনে ঢোকার ২০ কিলোমিটার দূরে শেষ বার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছিলাম। বাচ্চা ও তাঁকে নিতে আমাকে স্টেশনে আসতে বলল। স্টেশনে এসে দেখি, স্ত্রী আর বেঁচে নেই!’’

তোহানা স্টেশনে ট্রেন ঢুকলে স্ত্রী ও বাচ্চাকে নিতে কামরায় পৌঁছন স্বামী। দেখেন সন্তান কাঁদছে অঝোরে। জিজ্ঞাসাবাদ করার পর জানা যায়, যৌন হেনস্থায় বাধা পেয়ে তাঁর মাকে ধাক্কা মেরে ট্রেন থেকে ফেলে দিয়েছেন এক ব্যক্তি।

ওই রাতেই তন্নতন্ন করে মহিলার খোঁজ শুরু হয়। জিআরপির হাতে ধরা পড়েন নিগ্রহকারী ব্যক্তিও। সূত্রের খবর, ট্রেন থেকে লাফ দেওয়ায় তিনিও আহত। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। সুস্থ হলেই গ্রেফতার করা হবে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম সন্দীপ। তাঁর বয়স ২৭ বছর।

অন্য দিকে, মহিলার খোঁজে সারা রাত ধরে তল্লাশি চলে লাইনের দু’ধারে। কিন্তু কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। শেষ পর্যন্ত শুক্রবার ভোরের আলো ফোটার পর মহিলার ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ উদ্ধার হয়।

তোহানায় রেল পুলিশের সাব ইনস্পেক্টর জগদীশ বলেন, ‘‘নিরাপত্তায় কোনও ফাঁক ছিল কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রাতে চলন্ত ট্রেনের কামরার দিকে নজর রাখা রেল পুলিশের দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। সেই সময় কে ডিউটিতে ছিলেন তা জানার চেষ্টা করছি। এফআইআর দায়ের করে তদন্তের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.