পেনশন ব্যবস্থা নিয়ে বিস্ফোরক মমতা৷ বুধবার মেয়ো রোডে তৃণমূল ছাত্র প্রতিষ্ঠা দিবসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার বক্তৃতায় বলেন,মানবিকতার খাতিরে পেনশনটা আমরা তুলে দিই না। আর তা তুলে দিলে অনেক টাকা বেঁচে যেত। সমস্ত রাজ্য সরকারি কর্মীদের পেনশন তুলে দিয়েছে। ত্রিপুরায় এই মুহূর্তে বিজেপি সরকার। আর সেখানে তারা ক্ষমতা দখলের পরেই ওই রাজ্য থেকে পেনশন তুলে দেয়। কিন্তু একমাত্র পশ্চিমবঙ্গ যেখানে এখনও পর্যন্ত পেনশন দেওয়া হয়।
এই বিষয় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজয় শঙ্কর সিংহ জানান, অতীতে কোনও সরকার এ কথা বলেনি৷ এখন শুনছি৷ এই কথা বলা মানে কর্মচারীদের মনোবলে আঘাত করা৷ পেনশন কোনও দয়ার দান নয়৷ ডিএ, পেনশন রাজ্য সরকারি কর্মীদের প্রাপ্য। তা কখনই সরকার এভাবে তুলে দিতে পারে না৷ তবে এটা ঠিক, সমস্ত রাজ্যে নয়া পেনশন নীতি ( NPS)চালু করলেও , এই রাজ্যে এখনও তা হয়নি৷
মোদি সরকারের আমলে ন্যাশনাল পেনশন স্কিম ( NPS)এ কন্ট্রিবিউশন বেসিক স্যালারিতে ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৪ শতাংশ করে দেওয়া হয়৷ যদিও মিনিমাম কন্ট্রিবিউশন অবশ্য ১০ শতাংশ রাখা হয়৷ এনপিএস ২০০৪ সালে চালু করা হয়েছিল সরকারি কর্মচারীদের জন্য ৷ তবে ২০০৯ সালে সমস্ত ক্ষেত্রে কর্মচারীদের জন্য এই স্কিম চালু করা হয়েছিল৷ বিশেষ করে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কর্মীদের জন্য৷ বলা হয় ওই স্কিমে বিনিয়োগকারীদের টাকা শেয়ার ও বন্ড মার্কেটে ইনভেস্ট করা হবে৷ এবং বাজার দরের উপর নির্ভর করবে৷ আর এতেই আপত্তি তুলেন রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটি৷
উল্লেখ্য, ভোটে জিতে ত্রিপুরায় ক্ষমতায় আসার কয়েক মাসের মধ্যে বিজেপি সরকার সিদ্ধান্ত নেয় সরকারি কর্মী বা শিক্ষক হিসেবে যারা নতুন চাকরিতে ঢুকবেন, তাঁদের জন্য নির্দিষ্ট পেনশন বলে আর কিছু থাকবে না। থাকবে না প্রভিডেন্ট ফান্ডও। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানায়, নতুন সরকারি কর্মীদের জন্য আর স্থায়ী পেনশনের ব্যবস্থা থাকবে না। যারা ১ জুলাই, ২০১৮ থেকে কাজে যোগ দেবেন, তাঁদের অবসরকালীন পাওনা বিবেচিত হবে ‘কন্ট্রিবিউটরি পেনশন স্কিম’ মেনে। কেন্দ্রের ওই প্রকল্পের আদলে ত্রিপুরা সরকারও নিজস্ব নিয়ম-বিধি চালু করছে।
বিজ্ঞপ্তিতে রাজ্য সরকারের যুক্তি, পেনশন খাতে ২০০৬-০৭ সালে রাজ্যের খরচ হত ২৬৭ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকা। সেই বোঝা বেড়ে ২০১৭-১৮ সালে ১৬০৫ কোটি এক লক্ষে দাঁড়িয়েছে। ভবিষ্যতের নাগরিকদের উপরে আর বোঝা কমানোর লক্ষ্যেই পেনশন ব্যবস্থায় সংস্কার করা হচ্ছে। এমন সিদ্ধান্তের জেরে মানুষের সঙ্গে ‘প্রতারণা’র অভিযোগে বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হয়েছে সিপিএম ও তৃণমূল। সেই বিষয়টিকে এবার ফের একবার সামনে আনলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।