Basirhat: বাড়িতে শিক্ষিকা স্ত্রী, ইলেকট্রিক মিস্ত্রি স্বামীই ক্লাস নেন স্কুলে

শিক্ষিকা স্ত্রী স্কুলে আসেন না। বদলে স্কুলে এসে ক্লাস করান তাঁর স্বামী। এমনকী স্কুলের বিভিন্ন বিষয় তিনি তদারকিও করেন বলে অভিযোগ। দেগঙ্গার খেঁজুরডাঙা এসএসকে স্কুলের ঘটনা। দীর্ঘদিন ধরে চলা এই ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার স্কুলে বিক্ষোভ দেখান অভিভাবকদের একাংশ। অভিযুক্ত ওই ব্যক্তিকে আটকে রেখে বিক্ষোভ চলে।

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বছর কুড়ি আগে প্রতিষ্ঠা হয় খেঁজুরডাঙার এই প্রাথমিক স্কুলটি। সেই সময় স্কুলে মোট শিক্ষিকা ছিলেন চারজন। দু’জন অবসর নেওয়ায় বর্তমানে দু’জন শিক্ষিকা আছেন। স্কুলের প্রায় ৭০ জন ছাত্রছাত্রীর পঠন পাঠনের ভার তাঁদের কাঁধেই। কিন্তু অভিভাবকদের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষিকার দায়িত্বে থাকা ফিরোজা বিবি দীর্ঘদিন স্কুলে আসেন না। তাঁর পরিবর্তে স্কুলে এসে পড়ান ফিরোজার স্বামী পেশায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি শহিদুল ইসলাম বিশ্বাস। পড়ানোর পাশাপাশি স্কুলের বিভিন্ন বিষয়ে শহিদুল নাক গলান বলেও অভিযোগ। তার নির্দেশে পড়ুয়াদের নিম্নমানের খাবার দেওয়া হচ্ছে বলে জানান অভিভাবকেরা। প্রতিবাদ করলে শহিদুল হুমকি দেয় বলেও অভিযোগ।

প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা এ দিন প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ দেখান স্কুলে। নকল শিক্ষকের বদলে আসল শিক্ষকের স্কুলে আসার দাবি জানান তাঁরা। শহিদুলকে স্কুলেরই একটি ঘরে আটকে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। স্থানীয় বাসিন্দা মোস্তাকিম রহমান বলেন, “বেশ কিছুদিন ধরেই দেখছি, পেশায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি এক ব্যক্তি স্কুলে পড়াচ্ছেন। তিনি স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকার স্বামী। নকল শিক্ষক স্কুলে পড়াবেন, এটা চলতে পারে না।” এক অভিভাবক কাজল বিবি বলেন, “নকল শিক্ষকই স্কুলে পড়ান। স্কুলের মিড ডে মিলের ব্যাপারেও নাক গলান। পড়ুয়াদের নিম্নমানের খাবার দেন। প্রতিবাদ করলে ওই নকল শিক্ষক হুমকিও দেন।” এ দিন প্রায় ঘণ্টা দু’য়েক আটকে রাখার পর ছাড়া হয় শহিদুলকে।

স্কুলে পড়ানোর কথা স্বীকার করে নিয়েছেন শহিদুল। তিনি বলেন, “স্ত্রী অসুস্থ। তাই স্ত্রীর হয়ে আমি স্কুলে এসে দু-চারটে ক্লাস নিই।” দেগঙ্গা পঞ্চায়েত সমিতির এডুকেশন অফিসার পারভেজুর রহমান বিশ্বাস বলেন, “ওই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকার স্বামী আজ মিড ডে মিলের খাবার দিতে গিয়েছিলেন বলে শুনেছি। সেই সময়ে এলাকাবাসী বিক্ষোভ দেখান এবং তালা দিয়ে তাঁকে আটকে রাখেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ সত্য প্রমাণ হলে, ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.