শুধু নিজেদের হেফাজতে নয়। মাঝরাত পেরিয়ে নিজেদের ডেরায় নিয়ে এল সিবিআই। হ্যাঁ, তিনি বীরভূমের বেতাজ বাদশা অনুব্রত মণ্ডল। সাড়ে সাত ঘণ্টা পথ পেরিয়ে গাড়ি যখন কলকাতার নিজাম প্যালেসে পৌঁছল তখন ঘড়িতে পৌনে ৩টে। রাস্তায় যানজটে ৫০ মিনিট আটকে ছিল সিবিআইয়ের গাড়ি। রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ হুগলির ধনেখালিতে যানজটে আটকে যায় সিবিআইয়ের গাড়ি। যে নিজাম প্যালেস আসার জন্য তাঁকে এর আগে অন্তত দশবার তলব করছিল সিবিআই, সেখানেই তাঁকে নিয়ে আসা হল। একেবারে নিজেদের ডেরায়।
কেমন কাটল রাতের সফর? অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে সিবিআই আসানসোল থেকে সওয়া ৭টা নাগাদ নিয়ে রওনা দিয়েছিল গাড়ি। আসানসোল থেকে কলকাতার কম পথ নয়। তার উপর যানজট। সম মিলিয়ে সাড়ে সাত ঘণ্টা সময় লাগে। সুতরাং ঘড়িতে পৌনে ৩টে বেজে যায়। যানজটের সময় সাংবাদিকরা অনুব্রতকে নানা প্রশ্ন করতেও থাকে। কিন্তু ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থাকেন তিনি। নবান্নের পাশ দিয়ে দ্বিতীয় হুগলি সেতু পার করে সিবিআইয়ের কনভয় যখন কলকাতায় ঢুকছে তখন ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে পড়েছেন বীরভূমের কেষ্ট।
তারপর ঠিক কী ঘটল? রাতের অন্ধকারে অনুব্রত মণ্ডলের জন্য সব ব্যবস্থা করে রেখেছিল সিবিআই। নিজাম প্যালেসে সব ব্যবস্থা করে রেখেছিল সিবিআই। কলকাতা পুলিশের প্রহরাও বেড়ে যায়। রাখা হয়েছিল অক্সিজেন সিলিন্ডার। রাত ২টো ৪৩ মিনিটে নিজাম প্যালেসে পৌঁছলে গাড়ি থেকে নেমে হেঁটেই ঢুকলেন অনুব্রত মণ্ডল। আগে তাঁকে দেখা গেছে কারও কাঁধে ভর দিয়ে নিজামে ঢুকতে–বেরোতে। এবার তা দেখা যায়নি।
কী হল রাতে নিজাম প্যালেসে? এদিন সেখানে রাতে তাঁকে বিশ্রাম নিতে দেওয়া হয়। তবে সেখানে হাউহাউ করে কেঁদে ফেলেন এই দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা। তারপর একটু জল খান। আকাশের দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন। আর বিড়বিড় করে বলেন, সবাই মিলে ফাঁসিয়ে দিল। কোনও অপরাধ তো করিনি। এই কথা শুনেছেন সিবিআইয়ের কয়েকজন অফিসার। আজ, শুক্রবার তাঁকে গরুপাচার মামলা নিয়ে জেরা করা হবে। গালে হাত দিয়েই বাকি রাত কাটে তৃণমূল কংগ্রেসের বীরভূম জেলা সভাপতির বলে সূত্রের খভর।