তাইওয়ানের খুব কাছেই সামরিক মহড়া শুরু করেছে চিন। মার্কিন কংগ্রেসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের পরই এই উস্কানিমূলক কার্যকলাপ শুরু করেছে পিএলএ। এই আবহে এবার বেজিংকে পালটা চোখ রাঙিয়ে যৌথ সামরিক মহড়ায় নামতে চলেছে ভারত ও আমেরিকায়। নিক্কেই এশিয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী, উত্তরাখণ্ডে ভারত-চিন সীমান্তের খুব কাছেই অক্টোবর মাসে যৌথ সামরিক মহড়া দিতে চলেছে ভারত ও মার্কিন সেনা।
রিপোর্ট অনুযায়ী, ১০ হাজার ফিট উচ্চতায় উত্তরাখণ্ডের অউলিতে এই যৌথ সামরিক মহড়া হতে চলেছে আগামী ১৮ থেকে ৩১ অক্টোবর। প্রশান্ত মহাসাগরে নিযুক্ত মার্কিন সামরিক বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, উচ্চতায় যুদ্ধ অনুশীলনের উপর জোর দেওয়া হবে এই যৌথ মহড়ার সময়। প্রসঙ্গত, বার্ষিক ‘যুদ্ধ অভ্যাস’ অস্বাভাবিক নয়। তবে এই যৌথ মহড়ার স্থান, কাল বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
ইউএস আর্মি প্যাসিফিকের মেজর জোনাথন লুইস নিক্কেই এশিয়াকে বলেছেন, এই বছরের যুদ্ধ অনুশীলনের মূল লক্ষ্য ঠান্ডা এবং উচ্চতার সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে সামরিক মহড়া। প্রঙ্গত, যেখানে এই মহড়া হবে, সেটি প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে মাত্র ৯৫ কিলোমিটার দূরে। এর আগে ২০১৪, ২০১৬ এবং ২০১৮ সালেও উত্তরাখণ্ডে ভারতের তরফে যুদ্ধ অনুশীলনের আয়োজন করা হয়েছিল। তবে প্রতিবারই চিন সীমান্ত থেকে মহড়ার স্থান অন্তত ৩০০ কিমি দূর ছিল। চিন সীমান্তের এত কাছে কোনওদিন এর আগে ভারতে যুদ্ধ মহড়া হয়নি।
উল্লেখ্য, ভারত-চিন সীমান্ত বিবাদ তৃতীয় বর্ষে পড়েছে। ২০২০ সালের গালওয়ান সংঘর্ষের পর থেকেই দুই দেশের সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। এই আবহে তিব্বতে চিন একাধিকবার সামরিক মহড়া করেছে। এদিকে তাইওয়ান ইস্যুতে আমেরিকার সঙ্গেও চিনের সম্পর্ক তলানিতে। সরাসরি হুমকি দিয়েও মার্কিন কংগ্রেসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফর রুখতে পারেনি বেজিং। এরই মাঝে বিভিন্ন সময় চতুর্দেশীয় জোট কোয়াডকে কটাক্ষ করে এসেছে চিন। এই পরিস্থিতিতে চিন সীমান্তের এত কাছে ভারত-আমেরিকার যৌথ সামরিক অভিযান সরাসরি বেজিংকে বার্তা পৌঁছে দেওয়া। এদিকে উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য আমেরিকা যে ভারতের উপর কতটা নির্ভরশীল, তাও একবার প্রকাশ্যে আসছে এই যুদ্ধ অভ্যাসের হাত ধরে।