শনিবার কলকাতার বুকে গুলি চালানোর ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছেন রাজ্যবাসী। তার জেরে একজনের মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন আরও একজন। ১৫ রাউন্ড গুলি চালিয়ে সিআইএসএফ বারাকের ভিতরে দাপিয়ে বেড়ান হেড কনস্টেবল ৪৩ বছরের অক্ষয়কুমার মিশ্র। তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রূদ্ধশ্বাস এই অভিযানের পোশাকি নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন মোজো’। আর রবিবার পুলিশের কাছে বিস্ফোরক দাবি করেছেন এই ধৃত জওয়ান।
ঠিক কী দাবি ধৃত জওয়ানের? পুলিশকে দেওয়া জওয়ানের বয়ান অনুযায়ী, গত দু’মাস ধরে ঊর্ধ্বতন অফিসারের হাতে হেনস্থার শিকার হচ্ছিলেন। সিআইএসএফের অ্যাসিস্টেন্ট কমিশনার সুবীর ঘোষ নিয়মিত উত্ত্যক্ত এবং মানসিক নির্যাতন করতেন। আর সহ্য করতে না পেরে বাধ্য হয়েই গুলি চালাতে হয়েছে। শনিবার ভরসন্ধ্যেবেলা ভারতীয় জাদুঘরে সিআইএসএফের ব্যারাকে একে–৪৭ রাইফেল থেকে পরপর ১৫ রাউন্ড গুলি চলে। সুবীর ঘোষ যে গাড়িতে ছিলেন, সেই গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন অক্ষয়কুমার। শনিবার রাতেই ঘটনাস্থলে আসে ফরেনসিক দল। ধৃত জওয়ানকে আজ রবিবারই তোলা হবে আদালতে। রবিবার বিকেল তিনটে নাগাদ আবার গুলিবিদ্ধ গাড়ির পরীক্ষা করতে আসবেন ফরেনসিক দল বলে সূত্রের খবর।
ঠিক কী পরিস্থিতি এখন? জানা গিয়েছে, সারারাত ম্যারাথন জেরার পর রবিবার এসএসকেএম হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় অক্ষয়কুমার মিশ্রকে। তারপর দুপুরে তোলা হবে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে। নিউ মার্কেট থানার পুলিশ আধিকারিকরা রাত জেগে অক্ষয়কে কোর্টে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও নথি তৈরি করেছেন। জাদুঘর চত্বরে গুলিকাণ্ডের পরেই নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে কলকাতা পুলিশের কিউআরটি ভ্যান।
ঠিক কী বলছে পুলিশ? এই ঘটনায় কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল বলেন, ‘প্রায় ১৫ রাউন্ড গুলি চলেছে। হোমিসাইড শাখার ওসি বীরেশ্বর চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তিনজনের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছে।’ এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করেন হেড কনস্টেবল অক্ষয়কুমার মিশ্র। তাঁর গুলিতে মৃত্যু হয় সিআইএসএফ–এর এএসআই রঞ্জিতকুমার সারেঙ্গির। গুলিবিদ্ধ হন সুবীর ঘোষ।