ঠিকানা প্রেসিডেন্সি জেল। তাতে সম্বল কম্বল আর টেবিল ফ্যানের হাওয়া। আগামী ১৪ দিন এখানেই থাকতে হবে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। জানার পর কোনও অভিযোগই করেননি এককালের দুঁদে নেতা। বরং ভাবলেশহীন ভাবে মেনে নিয়েছেন।
শুক্রবার এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর বিশেষ আদালত ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতে পাঠিয়েছে পার্থকে। এজলাস থেকে বেরিয়ে আর মাথা তোলেননি তিনি। বরং মাথা নামিয়েই এগিয়ে গিয়েছেন আদালতের লিফটের দিকে। এক তৃণমূল কর্মী এসে বলেছিলেন, ‘‘পাশে রয়েছি দাদা। জগন্নাথ রক্ষা করবেন।’’ তৃণমূলের প্রাক্তন মহাসচিব বলে ওঠেন, ‘‘জগন্নাথ প্রভু তো কিছুই করছেন না!’’
এর পরেই যেন উত্তরোত্তর বেড়েছে হতাশা। আদালত থেকে প্রেসিডেন্সি জেলে নিয়ে যাওয়া হয় পার্থকে। সেখানে সমস্ত সরকারি প্রক্রিয়া শেষ করেন জেলকর্মীরা। পুরোদস্তুর তল্লাশির পর মেটাল ডিটেক্টরের ভিতর দিয়ে তাঁকে জেলের ভিতর ঢুকতে বলা হয়। তখনই একটা ‘টিং’ করে শব্দ। দাঁড়িয়ে পড়েন হতচকিত পার্থ। জেলের কর্মী জিজ্ঞেস করেন, ‘‘আপনার কাছে কি কিছু রয়েছে?’’ তাঁর দিকে তাকিয়ে নিচু গলায় পার্থের জবাব, ‘‘এ জীবনে আর কী আছে!’’
জবাবটা তার কয়েক মিনিট পরেই পেয়ে গিয়েছিলেন পার্থ। প্রেসিডেন্সি জেলের সেল ব্লকের দু’নম্বর সেল। কয়েক ফিট লম্বা এই সেলেই আপাতত কাটবে পার্থের বন্দিজীবন।
জেল সূত্রে জানা গিয়েছে, এই কুঠুরিগুলি ছোট রান্নাঘর বা বড় শৌচালয়ের মাপে তৈরি। সেখানকার আবাসিকদের দেওয়া হয় তিনটি কম্বল। কুঠুরিতেই শৌচালয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। অল্প উঁচু দেওয়াল তুলে আড়াল করা হয় সেই শৌচকর্মের জায়গাটি। যাতে রক্ষীর নজরেই থাকেন বন্দি। এই কুঠুরিতে আর পাঁচ জন কয়েদির মতোই থাকবেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী।