President Election Result 2022: নির্বাচন কমিশনের হিসাবে বাংলার ৭১ বিধায়ক ভোট দিয়েছেন দ্রৌপদীকে, বাড়তি ১ কি তৃণমূলের?

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বাংলার ৭১ জন বিধায়কের ভোট পেয়েছেন বিজেপি নেতৃত্বধীন এনডিএ প্রার্থী এবং দেশের ভাবী রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। অন্য দিকে, বিরোধী জোটের প্রার্থী যশবন্ত সিন্‌হা পেয়েছেন ২১৬ জন বিধায়কের ভোট।

দেশের সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মধ্যে বাংলা থেকেই সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছেন যশবন্ত। তৃণমূলও এই লক্ষ্যই নিয়েছিল।

রাজ্য বিজেপি অবশ্য শুরু থেকেই দ্রৌপদীর পক্ষে দলের ‘৭৫’ বিধায়কের মধ্যে ৭০ জনের ভোট নিশ্চিত করতে চেয়েছিল। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে, এই ৭০ বিধায়কই যদি দ্রৌপদীকে ভোট দিয়ে থাকেন, তা হলে একটি বাড়তি ভোট কোথা থেকে এল, সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, তৃণমূলের কোনও এক বিধায়ক দ্রৌপদীর পক্ষে ক্রস-ভোটিং করেছেন। পাল্টা জবাব দেওয়া হয়েছে শাসকদলের পক্ষ থেকেও।

নির্বাচন কমিশন ভোট গণনার যে হিসাবনিকাশ প্রকাশ্যে এনেছে, তাতে দেখা গিয়েছে, বাংলার মোট ২৯১ জন বিধায়ক রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। যার ভোটমূল্য ৪৩,৯৪১। তার মধ্যে দ্রৌপদীর পক্ষে পড়া ৭১ জন বিধায়কের ভোটের মূল্য ১০,৭২১। অন্য দিকে, যশবন্তের পক্ষে রায় দেওয়া ২১৬ জন বিধায়কের ভোটের মূল্য ৩২,৬১৬। বাতিল হয়েছে ৪ জন বিধায়কের ভোট।

বর্তমানে বাংলায় বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা খাতায়কলমে ৭৫ হলেও, পাঁচ বিধায়ক ঘোষিত ভাবে শাসক শিবিরে যোগ দিয়েছেন। তাঁরা হলেন কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক মুকুল রায়, বাগদার বিশ্বজিৎ দাস, বিষ্ণুপুরের তন্ময় ঘোষ, রায়গঞ্জের কৃষ্ণ কল্যাণী এবং কালিয়াগঞ্জের সৌমেন রায়। তার নিরিখে অনুমান ছিল, বাংলা থেকে বিজেপির ৭০ জন বিধায়ক দ্রৌপদীর পক্ষে ভোট দেবেন। সেই তালিকায় ছিলেন বিজেপি ছেড়ে সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহের ছেলে পবন সিংহও। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের দেওয়া হিসাবে দেখা যাচ্ছে, মোট ৭১ জন বিধায়ক দ্রৌপদীকে ভোট দিয়েছেন।

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুর দাবি, তৃণমূলেরই কোনও এক বিধায়ক দ্রৌপদীকে ভোট দিয়েছেন। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘আমার প্রতিশ্রুতি মতোই বিজেপির ৭০ জন বিধায়ক দ্রৌপদী মুর্মুর পক্ষে ভোট দিয়েছেন। তৃণমূলের এক জন বিধায়ক ক্রস-ভোটিং করেছেন।’

রাজ্যের বিরোধী দলনেতার টুইটের জবাবে তৃণমূল পরিষদীয় দলের মুখ্যসচেতক নির্মল ঘোষ বলেন, ‘‘আজ সবে ফলাফল ঘোষণা হয়েছে। আর এর মধ্যে বিরোধী দলনেতা জেনে গেলেন কারা ক্রস ভোট দিয়েছে? উনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন। বিজেপির নির্বাচিত বিধায়কদের সংখ্যা যদি ওঁর মনে থাকত, তা হলে এ কথা বলতে পারতেন না উনি।’’

অন্য একটি টুইটে শুভেন্দুর আরও দাবি, রাজ্য বিধানসভায় ভোট দেওয়া তৃণমূলের ‘৩৪ জন’ সাংসদের (লোকসভা ও রাজ্যসভা মিলিয়ে) মধ্যে ৪ জন ক্রস-ভোটিং করেছেন। তাঁর দাবি, এর মধ্যে দু’টি ভোট দ্রৌপদীর পক্ষে গিয়েছে। অন্য দু’টি ভোট বাতিল হয়েছে। শুভেন্দুর এই দাবিও উড়িয়ে দিয়েছেন নির্মল। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের দলের রাজ্যসভা ও লোকসভা মিলিয়ে ৩২ জন সাংসদ বিধানসভায় ভোট দিয়েছেন। উনি ৩৪ কোথা থেকে পেলেন? বিরোধী দলনেতা নিজের কৃতিত্ব জাহির করে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে গুরুত্ব পেতে চাইছেন। তাই এ সব অসত্য কথা বলছেন। এ ভাবে অসত্য কথা বলে এ রাজ্যে এগোতে পারবে না বিজেপি। যত বলবে, তত পিছিয়ে যাবে।’’ সাংসদদের রাজ্যভিত্তিক হিসাব শুভেন্দু কোথা থেকে পেলেন, সেই প্রশ্নও তুলেছে তৃণমূল।
এই মুহূর্তে লোকসভা ও রাজ্যসভা মিলিয়ে খাতায়কলমে তৃণমূলের সাংসদ ৩৬ জন। এঁদের মধ্যে শিশির অধিকারী, দিব্যেন্দু অধিকারীও রয়েছেন। এ ছাড়া বিজেপির টিকিটে জয়ী সাংসদ অর্জুন সিংহ মাস দুয়েক আগে তৃণমূলের পতাকা হাতে নিয়েছেন।

তৃণমূল সাংসদ চৌধুরীমোহন জাটুয়া অসুস্থতার কারণে রাষ্ট্রপতি ভোট দিতে পারেননি। শিশির, দিব্যেন্দু এবং শত্রুঘ্ন সিনহা ভোট দিয়েছিলেন দিল্লিতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.