স্কুলে পড়াশোনার অসহ্য চাপ। বিশেষ করে রসায়ন এবং অঙ্কের দুই শিক্ষিকা তাঁকে প্রচণ্ড চাপ দিচ্ছেন। সে সব সহ্য করতে না পেরেই নিজেকে শেষ করার পথ বেছে নিয়েছেন। ‘সুইসাইড নোটে’ এই অভিযোগ করে ‘আত্মঘাতী’ হলেন তামিলনাড়ুর একটি বেসরকারি স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। গত বুধবার সকালে ওই স্কুল চত্বরে হস্টেলের কাছে ছাত্রীটির দেহ উদ্ধার হয়েছে। যদিও পরিবারের অভিযোগ, ছাত্রীকে খুন করেছেন স্কুলের আধিকারিক এবং শিক্ষিকারা। এই অভিযোগে শনি এবং রবিবার স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন ছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা। ছাত্রীর দেহ নিয়ে যেতেও অস্বীকার করেন তাঁরা। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে স্কুলের তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, কুড্ডালোরের জেলার বাসিন্দা ওই ছাত্রীর দেহের কাছে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে। তাতে লেখা, ‘আমি পড়াশোনায় ভালই। তবে রসায়নের অঙ্ক কষতে পারি না। এ নিয়ে রসায়নের শিক্ষিকা খুব চাপ দিচ্ছেন। বকুনিও দিয়েছেন। আমাকে বলেছেন, ‘পড়াশোনা না করে হস্টেলে কী করছি?’ আমার পক্ষে এ সব অসহনীয় হয়ে উঠেছে। আজ সকালে ক্লাস চলার সময় বলেছেন, ‘আমি হাসিঠাট্টায় মেতে রয়েছি।’ রসায়ন আর অঙ্কের শিক্ষিকা আমাকে খুব চাপ দিচ্ছেন। আর সহ্য করতে পারছি না!’
ওই সুইসাইড নোটে স্কুলের এক শিক্ষিকার নামও রয়েছে। ‘আপনাকে অনুরোধ করছি শান্তি ম্যা’ম, এ বছরের স্কুল আর হস্টেলের ফি আমার মাকে ফেরত দিয়ে দেবেন। আমি তো মোটে কয়েক দিন স্কুলের হস্টেলে ছিলাম!’
চিন্না সালেমের কাছে কল্লাকুরিচি এলাকায় ওই স্কুলের ছাত্রীটি তাঁর মা এবং বন্ধুদের কাছেও ক্ষমা চেয়েছেন বলে দাবি। সুইসাইড নোটে লেখা ছিল, ‘সরি আম্মা (মা), সরি আপ্পা (বাবা), সরি সন্তোষ, সরি মেঘলা… ’
এই ঘটনার পর সুবিচারের দাবিতে রবিবার আরও এক দফা বিক্ষোভ হয়। অভিযোগ, ছাত্রীর পরিবারের লোকজন বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন। এর পর শূন্যে গুলি চালিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয় পুলিশ। গোটা ঘটনায় উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনকে অনুরোধ করেছে তামিলনাড়ুর মহিলা কমিশন। পুলিশ জানিয়েছে, ছাত্রীর সুরক্ষায় গাফিলতির অভিযোগে স্কুলের মুখপাত্র রবি কুমার, সচিব শান্তি এবং প্রিন্সিপ্যাল শিব শঙ্করণকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাশাপাশি, এখনও পর্যন্ত প্রায় ৩০০ জন বিক্ষোভকারীকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ।