মাথাপিছু ৩,০০০ করে টাকা দিলে পরীক্ষার্থীরা অবাধে নকল করার সুযোগ পাবেন। মালদহের ইংরেজবাজারে এক বেসরকারি ডিএলএড (ডিপ্লোমা ইন এলিমেন্টারি এডুকেশন) কলেজের বিরুদ্ধে এমনই গুরুতর অভিযোগ করলেন পরীক্ষার্থীরা। তাঁদের আরও অভিযোগ, পরীক্ষার হলেই ওই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এমনকি, টাকা দিতে অস্বীকার করায় পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ। গোটা ঘটনায় মুখে কুলুপ এঁটেছেন ওই বেসরকারি কলেজ কর্তৃপক্ষ। ঘটনার তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন মালদহ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ।
১৫ জুলাই থেকে ডিএলএড বা বুনিয়াদি শিক্ষায় প্রথম বর্ষের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। মালদহের মানবেন্দ্রনাথ কলেজ অব এডুকেশনের পরীক্ষার্থীদের সিট পড়েছে ইংরেজবাজারের সতীশ বিএড কলেজে। ওই কলেজের পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ, পরীক্ষার প্রথম দিন তাঁদের কাছ থেকে ৩,০০০ করে টাকা দাবি করেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। টাকা দিলে পরীক্ষায় নকল করায় যাবতীয় সাহায্যের প্রতিশ্রুতিও দেন। কিন্তু সে টাকা দিতে অস্বীকার করেন পরীক্ষার্থীরা। অভিযোগ, এর পর থেকেই পরীক্ষার্থীদের উপর মানসিক নির্যাতন করছেন সতীশ বিএড কলেজ কর্তৃপক্ষ। কাজল সাহা নামে এক পরীক্ষার্থী বলেন, ‘‘পরীক্ষা দিয়ে গিয়ে অনেক স্যাররা আমাদের মানসিক ভাবে হেনস্থা করছেন। তিনতলায় আমাদের পরীক্ষার ঘরে মোটে দু’তিনটি ফ্যান রাখা হয়েছে। ফলে অনেককে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। অথচ আর একটি কলেজের পরীক্ষার্থীরা মোবাইল নিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছেন। শুনছি, তাঁদের সঙ্গে কিছু টাকাপয়সার সেটিং করা হয়েছে।’’
একই দাবি করেছেন নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক আরও এক পরীক্ষার্থী। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের পরীক্ষার হলে যাঁরা গার্ড দিচ্ছেন, তাঁরা ৩০০০ টাকা করে চাইছেন। ওঁরা বলছেন, তোমরা গ্রুপ করে টাকা দাও। টাকা পেলে তোমাদের নকল করার সুযোগ দেব। কেন টাকা দেব? আমরা পড়াশোনা করেছি। ভাল করে পরীক্ষা দিতে চাই।’’
এ নিয়ে মালদহ জেলাশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। যদিও এই অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি অভিযুক্ত কলেজের সম্পাদক রামানন্দ সাহা। তবে মালদহ প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান বাসন্তী বর্মণ বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব। এ ঘটনার তদন্ত করা হবে।’’