আয়কর আদায়ের নামে প্রত্যক্ষ কর দফতরের এক শ্রেণির অফিসার যে জুলুম ও সন্ত্রাস চালাচ্ছেন তা দমন করতে এ বার উদ্যোগী হল কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকার।
শুক্রবার বিকেলে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন সংবাদিক বৈঠক করে জানিয়ে দিলেন, কোনও ট্যাক্স অফিসার আর হাতে করে গিয়ে কাউকে আয়কর নোটিস পাঠাতে পারবেন না। তার কোনও মূল্যও থাকবে না। আয়কর নোটিস হবে কম্পিউটার জেনারেটেড। অর্থাৎ যিনি কর নির্ধারণ করবেন তাঁর মুখই দেখা যাবে না। বিজয়া দশমীর দিন থেকে এই নতুন ব্যবস্থা কার্যকর হবে।
কেন্দ্রের এই ঘোষণা ব্যবসায়ীদের আস্থা অর্জনে বড় পদক্ষেপ বলেই মনে করা হচ্ছে। অনেকের মতে, এ হল দীর্ঘদিনের বকেয়া অর্থনৈতিক সংস্কার।
প্রসঙ্গত, এক শ্রেণির আয়কর অফিসারের জুলুম কোন স্তরে পৌঁছেছে তা কদিন আগে প্রকট হয়ে গিয়েছে ক্যাফে কফি ডে-র কর্ণধার ভিজি সিদ্ধার্থের সুইসাইড নোটে। ম্যাঙ্গালোরের নেত্রবতী নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন তিনি। তার আগে সুইসাইড নোটে লিখে গিয়েছিলেন, আয়কর অফিসারদের উপর্যুপরি নোটিসে তিনি কতটা জেরবার হয়ে গিয়েছিলেন। সিদ্ধার্থের মৃত্যুর পর এ ব্যাপারে সরব হয়েছিলেন কিরণ মজুমদার শ সহ অনেক শিল্পপতি। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে সরকারের তরফে তাঁদের অনেককেই ফোন করে মুখ বন্ধ রাখতে অনুরোধ করা হয়েছিল। সেই সঙ্গে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল যে সরকার এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ করবে।
দৃশ্যত স্পষ্ট যে কর সন্ত্রাস বন্ধ করতে ব্যবস্থা নিতে বিশেষ দেরি করল না সরকার। এ দিন নির্মলা জানান, সমস্ত করদাতার কাছে কম্পিউটার জেনারেটেড নোটিস যাবে। তাতে ডকুমেন্ট আইডেন্টিফিকেশন নম্বর তথা ডিন থাকবে। ডিন নম্বর ছাড়া কোনও নোটিস কেউ পেলে তাকে গুরুত্ব দেওয়ার কোনও দরকার নেই। নির্মলার কথায়, কার কাছে কী নোটিস যাচ্ছে তা যে হেতু কেন্দ্রীয় ভাবে একটি তথ্য কেন্দ্র থেকে পাঠানো হবে, তাই সরকারের পক্ষে তার উপর নজর রাখা সহজ হবে।
নির্মলা জানান, কোনও কর দাতা নোটিসের জবাব দেওয়ার তিন মাসের মধ্যে তার নিষ্পত্তি করতে হবে। তিন মাসের মধ্যে তা নিষ্পত্তি না হলে করদাতার উদ্বেগের কারণ নেই। তাঁকে আর এ ব্যাপারে ভাবতে হবে না।
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের কর্তাদের মতে, সরকারের এই ঘোষণা কর্পোরেট তথা ব্যবসায়ীদের কাছে ইতিবাচক বার্তা পাঠাবে। সরকার ও বেসরকারি ক্ষেত্রের মধ্যে আস্থার সম্পর্কের যে ঘাটতি তৈরি হয়েছে তা এর ফলে দূর হবে।