রাজস্থানের উদয়পুরে ২৭ বছরের কানহাইয়া লালের নৃশংস হত্যাকান্ড ভারতের আপামর মানুষদের স্তম্ভিত করে দিলেও,ভারতের তথাকথিত “ধর্মনিরপেক্ষী”-গণ আশ্চর্যজনক ভাবে নিশ্চুপ!বিচ্ছিন্ন ভাবে দুই-এক জন ঘটনার নিন্দা করলেও তা যেন অতি ভয়ে ভয়ে ! অথচ “এঁরাই” আবার বিভিন্ন সময়ে,বিভিন্ন বিষয়কে কেন্দ্র করে জেহাদিদের তান্ডবে উল্লসিত হয়।ভারতে থেকে,ভারতে আয় করে,ভারতেরই খেয়ে,ভারতেরই ধ্বংস সাধনে নিবেদিতপ্রাণ যেন “এঁরা!”
উদয়পুর-হত্যাকান্ডের অব্যাবহিত পরেই দুই হত্যাকারী গ্রেপ্তার হয়েছে।তাদের জেরা করে গোয়ান্দারা ইতিমধ্যেই পাক-যোগের সন্ধান পেয়েছেন।হত্যাকারীদ্বয় স্বাভাবিক ভাবেই "শান্তিপ্রিয়" ইসলাম-বিশ্বাসী সুন্নি-ভূক্ত।
উদয়পুরের ঘটনা বিচ্ছিন্ন বিষয় নয়।ভারতে বারেবারেই এ-জাতীয় জঘন্য হিন্দু নিধনের ঘটনা ধারাবাহিক ভাবে চলে আসছে।পূর্ব-পশ্চিমের দুই প্রতিবেশী দেশেও একই ঘটনা ঘটে চলেছে দীর্ঘ বছর ধ'রে।
গুজরাটের গোধরা কান্ডের দেড় মাস পরে আরেকটি মর্মান্তিক হিন্দু-হত্যার ঘটনা ঘটে কেরালায়।যদিও সেখানে কোনোরূপ সাম্প্রদায়িক হানাহানির ইন্ধন ছিল না।
সবে সমুদ্র থেকে ফিরে বেলাভূমিতে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন হিন্দু মৎস্যজীবীরা।হঠাৎই “শান্তিপ্রিয়রা” তাঁদের উপরে সশস্ত্র হামলা চালায়।নয় জন নিরীহ হিন্দু মৎস্যজীবী ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান।তারও অধিক সংখ্যক মারাত্মক ভাবে আহত-রক্তাক্ত অবস্থায় বেলাভূমিতে কাতরাতে থাকে।
পুলিশী তদন্তে ধারালো অস্ত্র,রক্তমাখা তরোয়াল,দেশী বোমা উদ্ধার হয় কাছেরই একটি মসজিদ থেকে !তৎকালে সামাজিক গণমাধ্যম এতটা সহজলভ্য ছিল না।তাই সেই নৃশংস ঘটনা ভারত তথা বহির্ভারতে ততটা ছড়ায় নি।কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হল তখনকার সংবাদ মাধ্যমও ঘটনা প্রচার করেনি ।ভারতীয় “ধম্মনিরপেক্ষী”-রা বরাবরের মত হিন্দু নিধন নিয়ে একটিও পথসভাও করে নি।উদয়পুরের বেলাতেও তাই।অথচ “শান্তিপ্রিয়দের” কেউ স্বাভাবিক পথ দুর্ঘটনাতে সামান্য আহত হলেও “ধম্মনিরপেক্ষীরা” “গেল গেল রবে স-রবে বাহিরিয়া আসে” !
কেরালার ঘটনা ঘটে ২০০৩-এর প্রথম দিকে।ওই বছরের মে মাসে আসল ঘটনা সামনে আসে।সূত্র মারফৎ জানা সংশ্লিষ্ট মসজিদে ঘটনা নক্সা আঁকা হয়েছিল।গোধরার মতো আরেকটি হিন্দু হত্যাকান্ড ঘটানোর জন্য।গোধরায় ৫৩ ও কেরালায় ৯ জন নিরীহ হিন্দু প্রাণ হারান।
এর চেয়েও ভয়ানক চক্রান্ত চলতে থাকে তলে তলে।যার পটভূমিকা আরও বিস্তৃত।এয়ার লাইনসের ৮১৪ বিমান অপহরণ করে মুসলিম জঙ্গিরা।এবং নেপালের কাঠমান্ডু বিমান বন্দরে সেটি নামায় জঙ্গিরা।এর দুই বছর পর ওই একই জঙ্গিরা ভারতের সংসদ ভবন আক্রমণ করে।
এই ঘটনাগুলি যখন পরের পর ঘটতে থাকে তখন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী।বিশ্ববাসী সকলেই তাঁর পারদর্শীতা-বাগ্মীতা জানে। ” নিরপেক্ষীরা” তখন সুর চড়িয়ে বলতে থাকে বাজপেয়ী অযোগ্য প্রধানমন্ত্রী ! তৎকালীন মিডিয়া তো কাঠমান্ডুর ঘটনা দিগ্বিদিকে ছড়িয়ে দেয়।
বলাইবাহুল্য যে, গোধরা-কান্ডে সন্ত্রাসীদের প্রধান লক্ষ্যই ছিল তখনকার গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী তথা এখনকার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।মুখ্যমন্ত্রীর আসন থেকে মোদীকে সরানোর জন্য ইসলামি জঙ্গিদের গোধরা ঘটনা ছিল দীর্ঘ পরিকল্পনার ফসল।
বাজপেয়ীকে প্রধানমন্ত্রী ও মোদীকে মুখ্যমন্ত্রীর আসন থেকে সরানো-ই ছিল কংগ্রেস সমর্থিত জঙ্গিদের উদ্দেশ্য।সবাই জানে যে পরবর্তী লোকসভা নির্বাচনে ইউ.পি.এ. গঠন করে কংগ্রেস ক্ষমতায় আসে।যার সমাপ্তী ঘটে ২০১৪-তে এসে।চক্রান্তকারীরা বাজপেয়ীকে সরাতে পেরেছিল ঠিকই।কিন্তু তাদের “ভাগ্যের কী নিষ্ঠুর পরিহাস” ২০১৪-তে সেই মোদী-ই কিনা প্রধানমন্ত্রী হয়ে ফিরে এলেন ! একটু “গাত্রদাহ” তো হবেই ! ” কী কন্ ধম্মনিরপেক্ষী মুরুব্বিগণ”!
সকলেই দেখে চলেছেন যে,মুসলিমদের দ্বারা সংঘঠিত সব নৃশংস ঘটনাগুলো শুক্রবারেই হয়ে থাকে ! ব্যাপারটা কী কাকতলীয় মনে হয় ! মোটেই কিন্তু তা নয় ! ওই নির্দিষ্ট বারেই তারা ধর্মের নামে মসজিদে জড়ো হয়।মগজধোলাইয়ের কাজও একই সাথে একই বারে করা হয় ! “প্রার্থনা” শেষ করেই তারা কুকর্মে নামে!
কানয়াইয়া লালের নৃশংস হত্যার ভিডিও করে দুষ্কৃতীরা সমাজ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়।তাতে দুজনইকেই কি সুস্থ স্বাভাবিক বলে মনে হয় ! তারা এক উন্মাদনায় উন্মত্ত।ধর্মীয় উন্মাদনা কী রূপ নিষ্ঠুর হয় তা “শান্তিপ্রিয়দের” দেখেই বিশ্বাবাসী উপলব্ধি করতে পারে।তারা তাদের আরাধ্যর কাজ করছে বলে তাদের বোঝানো হয়।কানহাইয়া হত্যা ভিডিও হত্যাকারী এ-ও বলেছে যে, ” এই মুদী এ-ছুরি তোর বুকও বিদ্ধ করবে—এটাই প্রার্থনা।”
শ্রী লালের “প্রতিবেশী” জনৈক মুসলিম লালের বিরুদ্ধে প্রচার চালাতে থাকে।তাঁকে দোকান খুলতেও বাধা দেওয়া হয়েছিল।উল্লেখ্য যে,কানহাইয়া নাকি নুপুর শর্মা বিতর্কিত মন্তব্যকে সমর্থন করে সামাজিক মাধ্যমে পোষ্ট করেছিল।তাতেই তার প্রাণ নিতে জঙ্গিরা মরিয়া হয়ে ওঠে।
শ্রী লাল অবস্থার বেগতিক দেখে পুলিশী নিরাপত্তাও চেয়েছিলেন।পান নি।
শ্রী লালের হত্যা নিয়ে এন.আই.এ. তদন্ত করছে।ইতিমধ্যেই পাক ও আইসিস জঙ্গি-যোগের প্রাথমিক সূত্র পাওয়া গিয়েছে।হয়ত আরও গভীর ষড়যন্ত্র পাওয়া যাবে।
কিন্তু হিন্দুদের রক্ষার জন্য কী হবে
ভাষান্তরে – সুজিত চক্রবর্তী!