Rare Amnesia: বিরল রোগে নিজেকে শিশু ভাবেন যুবতী, স্বামীকে অপহরণকারী!

বয়স ২৯। তবে তা কমে প্রায়ই ছ’বছর হয়ে যায়। মুহূর্তে বালিকা হয়ে যান ক্লোয়ি বার্নার্ড। অবশ্য মনে মনে! এক বিরল রোগের শিকার ক্লোয়ি বয়সের সময়যানে চড়ে ২৩ বছর পিছিয়ে যেতে পারেন চোখের পলকে। তখন তিনি অন্য মানুষ। ন’বছরের পুরনো সঙ্গীকে চিনতে পারেন না একেবারেই। বরং আচমকা ঘরের ভিতর তাঁকে দেখলে ভয়ে চিৎকার করে ওঠেন। কারণ ‘শিশু ক্লোয়ি’র কাছে তাঁর হবু স্বামী তখন দাগী আসামি। তাঁকে নিজের সম্ভাব্য অপহরণকারী ভেবে বেদম ভয় পান তিনি।

ক্লোয়ির এই রোগ এবং উপসর্গ বিরল হলেও এর নামের সঙ্গে অনেকেই পরিচিত। স্মৃতিবিভ্রমের অসুস্থতা অ্যামেনশিয়ায় আক্রান্ত তিনি। তবে ক্লোয়ির অ্যামেনশিয়ার ধরন আলাদা। উপসর্গগুলিও অন্যরকম। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ক্লোয়ির এই রোগের নাম অ্যামেনশিয়া ফিট। এই রোগে স্মৃতিভ্রংশের পাশাপাশি একটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক জগৎ তৈরি করে নেন রোগী।

চার বছর আগে প্রথম এই রোগের কথা বুঝতে পারে ক্লোয়ির পরিবার। ২৫ বছরের তরুণী তাঁর বাবা এবং প্রেমিক জেমসকে নিয়ে একটি রেস্তরাঁয় খেতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে গিয়ে আর প্রেমিককে চিনতে পারছিলেন না। বাবাকে সঙ্গে নিয়ে তিনি কেন এক জন অচেনা যুবকের সঙ্গে বসে আছেন, তা তাঁর মাথাতেই আসছিল না। বিষয়টি নিয়ে তিনি যখন বেশ দোলাচলে, তখনই ক্লোয়ির বাবা তাঁদের দু’জনকে রেখে চলে যান। ক্লোয়ি এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, তিনি ভেবেছিলেন, তাঁর বাবা তাঁকে অচেনা এক পুরুষের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন! শেষে বাড়িতে মাকে ফোন করে তাঁর ভুল ভাঙে। মা তাঁকে জানান, জেমস তাঁরই পাঁচ বছরের পুরনো প্রেমিক।

এর এক বছরের মধ্যেই এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়। এ বার নিজের বাড়িতেই স্মৃতি হারান ক্লোয়ি। জেমসের সঙ্গে সে দিন ঝগড়া হয়েছিল তাঁর। রেগে গিয়ে আলাদা ঘরে শুতে গিয়েছিলেন। ঘুম ভাঙার পর নিজেকে ছ’বছরের বালিকা বলে ভাবতে শুরু করেন ক্লেয়ি। বাইরে এসে জেমসকে দেখে ভয় পেয়ে যান। তাঁর মনে হতে থাকে জেমস তাঁকে অপহরণ করবেন। তিনি এক জন অপরাধী। জেমস ঘটনাটির বর্ণনা দিয়ে বলেছেন, ‘‘আমি ভেবেছিলাম ঝগড়া হয়েছে বলে ও রেগে আছে। আদর করলেই ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু সেই চেষ্টা করতে গিয়ে ক্লোয়ি সটান ছুরি বাগিয়ে ধরে আমার দিকে।’’ ক্লোয়ির কাণ্ড দেখে তাঁর বাবা-মাকে ডাকেন জেমস। তিনি জানিয়েছেন, তাঁরা এসে ক্লোয়িকে ঘুম পাড়িয়ে দেন। পরে ঘুম ভাঙলে দেখা যায় আগের কথা মনেই নেই ক্লোয়ির।

চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, সাধারণত স্মৃতিভ্রমের রোগে সাধারণত বছরে কয়েক বার আক্রান্ত হন রোগী। কিন্তু ক্লোয়ির রোগ তাঁকে এমন পরিস্থিতিতে ফেলে প্রতি মাসে অন্তত দু’বার করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.