উইম্বলডনের প্রথম ম্যাচেই হোঁচট খেলেন নোভাক জোকোভিচ। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিপক্ষ সুন উ কুয়োনের বিরুদ্ধে একটি সেট খোয়াতে হল তাঁকে। শেষ পর্যন্ত ৬-৩, ৩-৬, ৬-৩, ৬-৪ গেমে ম্যাচ জিতলেও নিজের ছন্দ নিয়ে চিন্তায় থাকতে হবে জোকোভিচকে। ফাইনালের আগে রাফায়েল নাদালের মুখোমুখি হবেন না জোকোভিচ। কোয়ার্টার ফাইনালে খেলতে হতে পারে কার্লোস আলকারাজের মতো প্রতিপক্ষকে। এই ছন্দ তাঁকে চিন্তায় রাখবে।
টেনিসের ক্রমতালিকায় ৮১ নম্বরে থাকলেও প্রথম রাউন্ডে জোকোভিচের বিরুদ্ধে একেবারেই ভয় পাননি কুয়োন। প্রথম থেকেই আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে খেলছিলেন তিনি। দুর্দান্ত সার্ভ করছিলেন। ভাল রকম বিপদে ফেলে দিয়েছিলেন জোকোভিচকে। ৩১ মে রোলাঁ গারোজে ফাইনাল খেলার পর আবার টেনিস কোর্টে নেমেছিলেন জোকোভিচ। মাঝে কোনও জায়গাতেই ঘাসের কোর্টে প্রস্তুতি নেননি। ফলে প্রথম দিকে তাঁর একটু অসুবিধাই হচ্ছিল। জোকোভিচের সার্ভিস ভেঙে প্রথম সেটেই এক সময় ৩-১ এগিয়ে গিয়েছিলেন কুয়োন। ছন্দ ফিরে পেয়ে টানা পাঁচটি পয়েন্ট পেয়ে গেম জিতেছিলেন জোকোভিচ। দ্বিতীয় সেটেও জোকোভিচের বিরুদ্ধে এক সময় ৩-১ এগিয়ে গিয়েছিলেন কুয়োন। পাল্লা দিয়ে লম্বা র্যালি গড়ছিলেন জোকোভিচের বিরুদ্ধে। বেসলাইনের সামনেও যথেষ্ট সপ্রতিভ দেখাচ্ছিল তাঁকে। দ্বিতীয় সেটের নবম গেমের মাথায় প্রথম সেট পয়েন্ট পেয়েছিলেন কুয়োন। সেটি কাজে লাগিয়ে সেট জেতেন।
তৃতীয় সেট থেকে জোকোভিচের খেলার অনেক উন্নতি হয়। প্রতিপক্ষের দুর্বলতা বুঝে নিয়ে তাঁকে ব্যাকহ্যান্ডে খেলাতে থাকেন। বেসলাইনেও নিজের ছন্দ ফিরে পান। তখন দেখে মনেই হয়নি ঘাসের কোর্টে প্রথম বার খেলতে নেমেছেন। দ্রুত ম্যাচ নিয়ন্ত্রণে নেন জোকোভিচ। সার্বিয়ার তারকার অভিজ্ঞতার বিরুদ্ধে পেরে ওঠেননি কুয়োন। দু’জনের লড়াই চলেছে ২ ঘণ্টা ২৭ মিনিট। দ্বিতীয় রাউন্ডে থানাসি কোক্কিনাকিস এবং কামিল মাজরাক ম্যাচের বিজয়ীর বিরুদ্ধে খেলবেন জোকোভিচ। টানা চতুর্থ উইম্বলডন ট্রফির পিছনে দৌড়চ্ছেন তিনি। এ বার ট্রফি পেলে সাত বার উইম্বলডন জিতে ছুঁয়ে ফেলবেন পিট সাম্প্রাসকে। সামনে থাকবেন শুধু রজার ফেডেরার (৮)।
বৃষ্টির কারণে অনেক ম্যাচ শুরু হতে দেরি হয়েছে। তার মাঝেই তৃতীয় বাছাই ক্যাসপার রুড ৭-৬, ৭-৬, ৬-২ গেমে হারালেন আলবার্তো রামোস ভিনোলাসকে। নবম বাছাই ক্যামেরন নরি ৬-০, ৭-৬, ৬-৩ গেমে হারালেন পাবলো আন্দুজারকে।
মহিলাদের বিভাগে জিতলেন ইংল্যান্ডের খেলোয়াড় এমা রাদুকানু। সোমবার প্রথম রাউন্ডে তিনি ৬-৪, ৬-৪ হারান অ্যালিসন ফান উইটফাঙ্ককে। গোড়া থেকেই ম্যাচে দাপট ছিল রাদুকানু। উইটফাঙ্ক তাঁকে খুব বেশি সমস্যায় ফেলতে পারেননি। প্রসঙ্গত, উইম্বলডনে গত ৪৫ বছরে ব্রিটেনের কোনও মহিলা চ্যাম্পিয়ন হননি। রাদুকানুকে নিয়ে সেই স্বপ্ন দেখছেন ব্রিটিশেরা। মেয়েদের টেনিসে বিশ্বের ১১ নম্বর এই খেলোয়াড় গত বছর প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে চমকে দিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞদের। কিন্তু শ্বাসকষ্টের কারণে শেষ পর্যন্ত ম্যাচ ছেড়ে দিতে হয় তাঁকে। কিন্তু তার পরে গত সেপ্টেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্র ওপেন জিতে নিজের প্রতিভার জানান দিয়েছিলেন তিনি। ১৯৭৭ সালের উইম্বলডন জিতেছিলেন গ্রেট ব্রিটেনের ভার্জিনিয়া ওয়েড। তার পরে দ্বিতীয় ব্রিটিশ মহিলা হিসেবে কোনও গ্র্যান্ড স্ল্যামে প্রতিযোগিতা জিতে ইতিহাস স্পর্শ করেছিলেন রাদুকানু।