Ranji Trophy Final: রঞ্জিতে ইতিহাস, মুম্বইকে হারিয়ে প্রথম বার চ্যাম্পিয়ন মধ্যপ্রদেশ

রঞ্জির ফাইনালের প্রতিটা দিন একটি নির্দিষ্ট চেয়ারে বসে পুরো ম্যাচ দেখেছেন মধ্যপ্রদেশের কোচ চন্দ্রকান্ত পণ্ডিত। টেনশন নিয়ে প্রতিটা মুহূর্ত কাটালেও, মুম্বই বধের হিসেবটা তিনি একেবারে মেপে করেছিলেন। যার নিট ফল, ফাইনালে ৬ উইকেটে মুম্বইয়ের মতো শক্তিশালী দলকে হারিয়ে প্রথম বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বাদ পেল মধ্যপ্রদেশ।

মধ্যপ্রদেশ চ্যাম্পিয়ন হতেই আবেগে ভাসলেন চন্দ্রকান্ত পণ্ডিত। তাঁর চোখের কোণে জল চকচক করছিল। প্লেয়াররা কোচকে ঘিরে প্রথমে সেলিব্রেশনে মাতেন। তার পর তাঁকে কাঁধে তুলে নেন। পন্ডিতের ২৩ বছর আগের যন্ত্রণায় রজত পতিদাররা রবিবার যেন মলম লাগিয়ে দেন। বাঁধ ভাঙা উচ্ছ্বাসে মাতেন এমপি-র প্লেয়াররা।

১৯৯৮-৯৯ রঞ্জিতে ২৩ বছর আগে প্রথম বার রঞ্জির ফাইনালে উঠেছিল মধ্যপ্রদেশ। কিন্তু কর্ণাটকের বিরুদ্ধে তারা সে বার হেরে যায়। এর পর ফের এই বছর ফাইনালে ওঠে এমপি। মধ্যপ্রদেশ ২৩ বছর আগে যখন রঞ্জির ফাইনাল খেলেছিল, তখন সেই দলের অধিনায়ক ছিলেন চন্দ্রকান্ত পণ্ডিত। সে বার তিনি দলকে চ্যাম্পিয়ন করতে পারেননি। আর এ বার তিনি মধ্যপ্রদেশের কোচ। মাঠের বাইরে থেকে নিখুঁত অঙ্কে এই বারের হিসেবটা একেবারে মিলিয়ে ফেললেন চন্দ্রকান্ত পণ্ডিত। আর সেই সঙ্গেই ইতিহাস লিখে ফেলল মধ্যপ্রদেশ।

রঞ্জি ফাইনালের শেষ দিনের সকালে মুম্বইকে রীতিমতো চোখে সর্ষেফুল দেখিয়ে দেন আইপিএলের টিম মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের তরুণ বোলার কুমার কার্তিকেয়। তাঁর দাপটেই লাঞ্চের আগে গুটিয়ে যায় মুম্বইয়ের ইনিংস। কার্তিকেয় দ্বিতীয় ইনিংসে মোট ৪ উইকেট তুলে নেন। এ দিন নিয়েছেন ৩ উইকেট। হার্দিক তামোরেকে শনিবারই আউট করেছিলেন তিনি। এ দিন সুভেদ পার্কার, যশস্বী জয়সওয়াল, তনুশ কোটিয়ানের মতো তিনটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে নেন এ দিন। এ ছাড়া ২টি করে উইকেট নিয়েছেন গৌরব যাদব এবং পার্থ সাহানি।

মুম্বইয়ের হয়ে পৃথ্বী ৪৪ করে শনিবার আউট হয়েছিলেন। চতুর্থ দিনের শেষে ক্রিজে ছিলেন আরমান জাফর (৩৪ বলে ৩০ রান) এবং সুদেভ পার্কার (১৪ বলে ৯ রান)। মুম্বই স্কোর ছিল ২ উইকেটে ১১৩ রান। সেখান থেকে এ দিন মাত্র ১৫৬ রান যোগ করে মুম্বই। জাফর ৩৭ করে আউট হয়ে যান। সুভেদ পার্কার ৫১ করেন। ৪৫ করেন সরফরাজ খান। বাকিরা কেউ ২০ রানের গণ্ডিই টপকাতে পারেননি। দ্বিতীয় ইনিংসে মুম্বই করে ২৬৯ রান। মাত্র ১০৮ রান লক্ষ্য হয় মধ্যপ্রদেশের। যা ৪ উইকেট হারিয়ে সহজে তুলে নেন রজত পতিদাররা।

দ্বিতীয় ইনিংসে রজত ৩০ রান করে অপরাজিত থাকেন। আদিত্য শ্রীবাস্তব অবশ্য অপরাজিত থাকেন ১ রানে। এ ছাড়া হিমাংশু মন্ত্রী ৩৭ করেছেন, শুভম শর্মা করেছেন ৩০ রান। মুম্বইয়ের শামস মুলানি ৩ উইকেট নিয়েছেন।

রঞ্জির ফাইনালের সংক্ষিপ্ত স্কোর-

প্রথম ইনিংস:

মুম্বই- ৩৭৪ (ব্যাটিং: সরফরাজ খান- ১৩৪, যশস্বী জয়সওয়াল-৭৮ পৃথ্বী শ’- ৪৭, বোলিং: গৌরব যাদব- ৪ উইকে, অনুভ আগরওয়াল- ৩ উইকেট, সারাংশ জৈন- ২উইকেট, কুমার কার্তিকেয়- ১ উইকেট)

মধ্যপ্রদেশ- ৫৩৬ (ব্যাটিং: যশ দুবে- ১৩৩, রজত পতিদার- ১২২, শুভম শর্মা- ১১৬, সারাংশ জৈন- ৫৭, বোলিং: শামস মুলানি- ৫ উইকেট, তুষার দেশপাণ্ডে- ৩ উইকেট, মোহিত আবস্তি- ২উইকেট)

দ্বিতীয় ইনিংস:

মুম্বই- ২৬৯ (ব্যাটিং: সুভেদ পার্কার- ৫১, সরফরাজ খান- ৪৫, পৃথ্বী শ’- ৪৪, বোলিং: কুমার কার্তিকেয়- ৪ উইকেট, গৌরব যাদব- ২ উইকেট, পার্থ সাহানি- ২ উইকেট)

মধ্যপ্রদেশ- ১০৮/৪ (ব্যাটিং: হিমাংশু মন্ত্রী- ৩৭, শুভম শর্মা- ৩০, রজত পতিদার- ৩০, বোলিং: শামস মুলানি- ৩ উইকেট, ধবল কুলকার্নি- ১উইকেট)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.