যে ২ হাজার ৭৮৭ জন প্রাথমিক শিক্ষকের নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছেন মামলাকারীরা, তাঁদের চাকরির আবেদনপত্রই নেই নিয়োগকারী সংস্থা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের কাছে! কলকাতা হাই কোর্টে শুক্রবার এই সংক্রান্ত নথিপত্র জমা দেওয়ার কথা ছিল পর্ষদের। কিন্তু তারা জানিয়েছে, ওই নথি জমা দিতে পারছে না।
২০১৪ সালের টেট পরীক্ষায় ২৩ লক্ষ প্রার্থী আবেদন করেছিলেন চাকরির জন্য। এঁদের মধ্যে ২১ লক্ষ প্রার্থী পরীক্ষা দেন। দেড় লক্ষ প্রার্থী পাশ করেন। আদালতে মামলাকারীদের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম এবং সুদীপ্ত দাশগুপ্ত অভিযোগ করেছিলেন, যে ২ হাজার ৭৮৭ জনকে চাকরি দেওয়া হয়েছে, তাঁরা এঁদের কোনও বিভাগেই পড়েন না। তাঁরা আদৌ চাকরির জন্য আবেদনই করেননি। মামলাকারীদের এই অভিযোগের ভিত্তিতে ওই ২ হাজার ৭৮৭ জনের চাকরির আবেদনপত্র আদালতের কাছে জমা দিতে বলেছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। শুক্রবার তাঁর এজলাসে প্রাথমিক শিক্ষা সংক্রান্ত মামলাটির শুনানি ছিল। কিন্তু পর্ষদ আদালতকে জানায়, ২৩ লক্ষ টেট পরীক্ষার প্রার্থীর মধ্যে থেকে ওই ২ হাজার ৭৮৭ জনের আবেদনপত্র খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তবে ওই নথি জমা দিতে না পারলেও পর্ষদ আদালতের চাওয়া অন্যান্য নথি জমা দিয়েছে পর্ষদ। বিতর্কিত দ্বিতীয় মেধাতালিকা, পরীক্ষার্থীদের বাড়তি এক নম্বর করে দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রস্তাবপত্র, এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ কমিটি যে মত দিয়েছিলেন, নির্বাচন কমিটির সদস্য এবং তাঁদের মতামত এবং শিক্ষা দফতরের অনুমতিপত্রও আদালতের কাছে জমা দেয় পর্ষদ। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় সেই নথিপত্র সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন পর্ষদকে।
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহেও এই মামলার শুনানিতে পর্ষদকে নিয়োগ সংক্রান্ত বেশ কিছু নথির আসল কপি আনতে বলেছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। পর্ষদের আনা সেই সব নথি নিয়ে সন্তুষ্ট হতে পারেনি আদালত। বিচারপতি ওই নথিগুলি সেন্ট্রাল ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি (সিএফএসএল)-তে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। পর্ষদকে অন্য নথি আনারও নির্দেশ দিয়েছিলেন। শুক্রবার সেই নির্দেশ মতোই পর্ষদ নথি জমা দেয় আদালতে। এ বার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ওই নথিগুলিই সিবিআইকে দিতে বললেন।
শুক্রবার পর্ষদের দেওয়া নথি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মামলাকারীদের আইনজীবীরাও। আইনজীবী ফিরদৌস শামিম এবং সুদীপ্ত দাশগুপ্ত জানান, সব নথি আদালতে জমা দিতে পারেনি পর্ষদ। আবেদনপত্রের কপি দিতে তারা ব্যর্থ হয়েছে।