বুঝতে পারেননি, অগ্নিপথ প্রকল্প নিয়ে দেশ জুড়ে এই রকম পরিস্থিতি তৈরি হবে। এমনই মন্তব্য করলেন ভারতীয় নৌ সেনাবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল আর হরি কুমার। তিনি অগ্নিপথ প্রকল্পের অন্যতম রূপকারও বটে। হরি কুমার জানান, গত দেড় বছর ধরে তিনি এই প্রকল্পে কাজ করছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি অগ্নিপথ প্রকল্পের পরিকল্পনা দলের অংশ ছিলাম এবং দেড় বছর ধরে এই প্রকল্পে কাজ করেছি। এটি একটি পরিবর্তনশীল প্রকল্প। এর ফলে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে বিভিন্ন উপায়ে পরিবর্তন আসবে।’’
তবে এই প্রকল্প নিয়ে যথেষ্ট আশাবাদী হরি কুমার। তিনি এই প্রকল্পকে, ‘ভারতীয় সেনাবাহিনীর একক বৃহত্তম মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনার রূপান্তর’ বলেও ব্যাখ্যা করেছেন।
হরি কুমারের দাবি, এই প্রকল্প দেশের যুবকদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রকল্প। অগ্নিপথকে কেন্দ্র করে ভুল তথ্য এবং ভুল ধারণার কারণেই দেশ জুড়ে এত প্রতিবাদ হচ্ছে বলেও তিনি মনে করছেন।
তাঁর মতে, এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে আগে যেখানে এক জন সেনাবাহিনীতে চাকরির সুযোগ পেতেন, এখন সেখানে চার জন সেই চাকরি করার সুযোগ পাবেন।
প্রসঙ্গত, প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে অগ্নিপথ প্রকল্পের কথা ঘোষণা করার পর থেকেই দেশ জুড়ে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বিহার, উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, তেলঙ্গানা-সহ দেশের বহু রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে অগ্নিপথের আঁচ। দাউদাউ করে জ্বলছে ট্রেন। বিপর্যস্ত জনজীবন। বিপর্যস্ত রেল যোগাযোগ। সেনায় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের প্রকল্প অগ্নিপথের বিরোধিতায় বিক্ষোভের আঁচ এসে পড়েছে বাংলাতেও। ১৪ জুন মঙ্গলবার, কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ অগ্নিপথ প্রকল্পের ঘোষণা করেন। ঘোষণা করা হয়, এই প্রকল্পের আওতায় সাড়ে ১৭-২১ বছরের তরুণ-তরুণীরা চার বছরের জন্য মাসিক ৩০-৪৫ হাজার টাকার চুক্তির ভিত্তিতে সশস্ত্র বাহিনীর তিন শাখায় (স্থল, নৌ এবং বায়ুসেনা) যোগ দিতে পারবেন। প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানান, ওই সদস্যদের বলা হবে ‘অগ্নিবীর’। সেনায় শূন্যপদ ও যোগ্যতার ভিত্তিতে চতুর্থ বছরের শেষে সেই ব্যাচের সর্বাধিক ২৫ শতাংশ অগ্নিবীরকে সেনায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। বাকিদের ১১-১২ লক্ষ টাকা হাতে দিয়ে পাঠানো হবে অবসরে। থাকবে না কোনও পেনশন। আর কেন্দ্রের এই ঘোষণার পর পরই দেশের বিভিন্ন রাজ্যে তৈরি হয়েছে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি। বিক্ষোভ দেখাতে পথে নেমেছেন সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে ইচ্ছুক যুবকেরা।