কেন্দ্রের অগ্নিপথ প্রকল্পের বিরোধিতায় দেশ জুড়ে তুলকালাম কাণ্ড। বৃহস্পতিবারের পর শুক্রবারও অশান্তির আগুন জ্বলছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। এই আবহে প্রথম দফায় অগ্নিবীরদের (অগ্নিপথ প্রকল্পে যাঁদের নিয়োগ করা হবে, তাঁদের এই নামে ভূষিত করা হবে) প্রশিক্ষণ-পর্ব কবে শুরু হবে তা জানানো হল সেনার তরফে। চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে প্রশিক্ষণ শুরু হবে। চাকরি শুরু হবে আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে। এ কথা জানিয়েছেন ভারতীয় সেনাপ্রধান মনোজ পাণ্ডে।
সেনাপ্রধান আরও জানিয়েছেন, শীঘ্রই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। আগামী দু’দিনের মধ্যে ‘joinindianarmy.nic.in’-সাইটে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে। সেনায় চাকরি করতে ইচ্ছুক তরুণদের একাংশের বিক্ষোভ প্রসঙ্গে সেনাপ্রধান বলেন, ‘‘অগ্নিপথ প্রকল্প সম্পর্কে যথাযথ তথ্য তরুণদের হাতে নেই। এতে সকলের উপকার হবে।’’
অন্য দিকে, অগ্নিপথ প্রকল্পে ভারতীয় বায়ুসেনায় নিয়োগ শুরু হবে আগামী ২৪ জুন। এ কথা জানিয়েছেন বায়ুসেনা প্রধান ভি আর চৌধুরি। শুক্রবার ভার্চুয়াল মাধ্যমে তিনি বলেন, ‘‘আবেদনের ঊর্ধ্বসীমা ২৩ করা হয়েছে, এটা ভাল সিদ্ধান্ত। এতে যুব সম্প্রদায় উপকৃত হবে।’’
উল্লেখ্য, করোনা পরিস্থিতির জেরে গত দু’বছরে সেনায় নিয়োগ স্থগিত হয়ে যায়। গত মঙ্গলবার অগ্নিপথ প্রকল্পের ঘোষণা করেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। ওই প্রকল্পে সাড়ে ১৭-২১ বছরের তরুণ-তরুণীরা চার বছরের জন্য মাসিক ৩০-৪৫ হাজার টাকার চুক্তির ভিত্তিতে সশস্ত্র বাহিনীর তিন শাখায় (স্থল, নৌ এবং বায়ুসেনা) যোগ দিতে পারবেন। তাঁদের বলা হবে ‘অগ্নিবীর’। সেনায় শূন্যপদ ও যোগ্যতার ভিত্তিতে চতুর্থ বছরের শেষে সেই ব্যাচের সর্বাধিক ২৫ শতাংশ অগ্নিবীরকে সেনায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। বাকিদের ১১-১২ লক্ষ টাকা হাতে দিয়ে পাঠানো হবে অবসরে। থাকবে না কোনও পেনশন। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে গর্জে উঠেছেন সেনায় চাকরির আশায় থাকা দেশের তরুণ সমাজের একাংশ। বিক্ষোভ-অশান্তির জেরে বৃহস্পতিবার রাতে এই প্রকল্পের নিয়োগের নিয়ম কিছুটা শিথিল করে আবেদনের বয়স ২১ থেকে বাড়িয়ে ২৩ করা হয়েছে। তবুও বিক্ষোভ থামছে না। বরং তার আঁচ ক্রমশ বাড়ছে।
শুক্রবার ফের ট্রেন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। তেলঙ্গানার সেকেন্দরাবাদে আগুন লাগানো হয় একটি যাত্রিবাহী ট্রেনে। পূর্ব-উত্তরপ্রদেশের বালিয়া স্টেশনে একটি ট্রেনেও আগুন জ্বালিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। সেকেন্দরাবাদে পুলিশের গুলিতে এক আন্দোলনকারীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। গুরুগ্রাম-সহ কয়েকটি এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। গুরুগ্রামের পাশাপাশি, আগামী ২৪ ঘণ্টার জন্য ফরিদাবাদের বল্লভগড়ে সমস্ত ধরনের জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এক দিনের জন্য বন্ধ করা হয়েছে মোবাইল এবং ইন্টারনেট পরিষেবা।