Higher Secondary: ইংরেজিতে কেউ পেয়েছেন ৩, কেউ ৫, কারও বা নম্বর ৭, তবুও দাবি পাশ করিয়ে দেওয়ার!

ইংরেজির লিখিত পরীক্ষায় তারা পেয়েছে ১০ এরও কম নম্বর। তারপরেও অবিলম্বে পাশ করানোর দাবিতে স্কুলে এসে দরবার করছে। ঘটনা পশ্চিম মেদিনীপুরের গোয়ালতোড়ের পিংবনী হাইস্কুলের। ওই পরীক্ষার্থীদের দাবি, অন্য সব বিষয়ে তাদের ভাল নম্বর এলেও শুধু ইংরেজিতে পাশ নম্বর আসেনি। ইংরেজিতে এত কম নম্বর আসতে পারে না। ওই দাবি জানাতে মঙ্গলবার স্কুলে এসেছিল একদল পড়ুয়া। অবশ্য অনভিপ্রেত কোনও ঘটনা ঘটেনি।

গোয়ালতোড়ের পিংবনী হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রলয় বন্দ্যোপাধ্যায় মানছেন, ‘‘কয়েকজন ছাত্রী এসেছিল। তাদের কথা বলেছে। স্কুলের তরফে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হয়েছে।’’ জানা যাচ্ছে, স্কুলের তরফে নিয়মানুযায়ী রিভিউ করার জন্য ওই পরীক্ষার্থীদের বলে দেওয়া হয়েছে। প্রধান শিক্ষকের আশ্বাস, ‘‘ওই ছাত্রীরা রিভিউয়ের আবেদন করতে পারে। আবেদন করার ক্ষেত্রে নিশ্চিতভাবে স্কুল সহযোগিতা করবে।’’ গোয়ালতোড়ের এই স্কুল থেকে এ বার উচ্চমাধ্যমিক দিয়েছিল ১২২ জন। এরমধ্যে ২৬ জন অকৃতকার্য হয়েছে। ৯৬ জন কৃতকার্য হয়েছে। স্কুল সূত্রে খবর, অকৃতকার্য ওই ২৬ জনের সকলেই ইংরেজিতে ফেল করেছে। ইংরেজিতে লিখিত পরীক্ষায় ৮০-র মধ্যে ২৪ পায়নি। পেয়েছে তার কম নম্বর। ওই ২৬ জনের সকলেই ছাত্রী। স্কুল সূত্রে খবর, ওই ২৬ জনের মধ্যে একজন ছাত্রী ইংরেজিতে ৩ নম্বর পেয়েছে। আরেক ছাত্রী ৫ নম্বর পেয়েছে। তিনজন ৭ নম্বর পেয়েছে। প্রধান শিক্ষক মানছেন, ‘‘এক ছাত্রী লিখিত পরীক্ষায় ৩ নম্বর পেয়েছে।’’

উচ্চমাধ্যমিকে পাশ করতে না পারায় রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভ দেখাচ্ছে অকৃতকার্যরা। অবিলম্বে পাশ করিয়ে দেওয়ার দাবিও উঠছে। পশ্চিম মেদিনীপুরেও এমন দাবি উঠেছে। তবে এই জেলায় এখনও কোথাও গোলমাল হয়নি। উচ্চমাধ্যমিকে পাশের হারে এ বার রাজ্যে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর। এই জেলায় উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল প্রায় ৩৯ হাজার। পাশ করেছে ৯৬.২৯ শতাংশ ছাত্রছাত্রী। অর্থাৎ, ৩৭ হাজারেরও বেশি পড়ুয়া পাশ করেছে। প্রায় ২ হাজার পরীক্ষার্থী কৃতকার্য হতে পারেনি। এদের একাংশেরই দাবি, ভাল পরীক্ষা দেওয়ার পরও ফেল করিয়ে দেওয়া হয়েছে তাদের! পাশ করানোর দাবি নিয়ে স্কুলে যারা গিয়েছিল, তাদের মধ্যে ছিল মৌসুমী ভুঁইয়া। মৌসুমীর দাবি, ‘‘অন্য সব বিষয়ে ভাল নম্বর এলেও ইংরেজিতে পাশ নম্বর আসেনি। আমাদের উত্তরপত্র দেখতে কোনও না কোনও গাফিলতি হয়েছে। আমরা চাই, আমাদের যেন পাশ করানো হয়।’’

উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা অ্যাডভাইজ়ারি কমিটির সদস্য অরূপ ভুঁইয়া বলছেন, ‘‘পাশ করানোর দাবিতে বিক্ষোভ দেখানো অনুচিত। ওই পরীক্ষার্থীদের এখন উচিত, রিভিউয়ের জন্য আবেদন জানানো। পাশাপাশি, পরের বছর যাতে ভাল ভাবে পরীক্ষা দিতে পারে, সে জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নেওয়া।’’ তবে একাংশ পরীক্ষার্থীর মতে, রিভিউ করলেও তার ফলাফল প্রায় তিন মাস পর আসবে। ওই সময়ে তাদের ফল ভাল এলেও তা কোনও কাজে লাগবে না। কারণ, তখন তো আর কলেজে ভর্তি হওয়া যাবে না।

কিন্তু হোম সেন্টারে পর চাপমুক্ত পরিবেশে। তাও ইংরেজিতে ৩? এক শিক্ষক বলছেন, ‘‘এমনটা কী করে হয়, সেটাই ভাবছি!’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.